বিশেষ প্রতিনিধিঃএমপি বাসন্তী চাকমার পদত্যাগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাঙালিদের বিরুদ্ধে এমপি বাসন্তী চাকমার মনগড়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তার সংসদ সদস্যের পদ থেকে অপসারণের দাবিতে খাগড়াছড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেছে পাহাড়ের দুই বাঙালি সংগঠন। (২ মার্চ) শনিবার, সকাল সাড়ে ১০টায় খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য অধিকার ফোরাম কেন্দ্রীয় সংসদ ও পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, পার্বত্য অধিকার ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাঈন উদ্দিন। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মো. লোকমান হোসেন, কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মাসুদ, মাটিরাঙ্গা উপজেলা সভাপতি রবিউল হোসেন, পার্বত্য অধিকার ফোরামের জেলা সভাপতি এস এম হেলাল, পার্বত্য নারী অধিকার ফোরামের জেলা আহ্বায়ক সালমা আহমেদ মৌসহ সংগঠন দুটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা এতে অংশ নেয়। বাসন্তী চাকমা পাহাড়ের আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রধান মুখপাত্র হিসেবে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পার্বত্য বাঙালীদের নিয়ে সংসদে দেওয়া মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনা ও তার অপসারণ করা না হলে ৩ মার্চ খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেয় সংগঠন দুটি। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার পার্বত্য চট্টগ্রামের মহিলা সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা সংসদে তার জন্য নির্ধারিত স্বাগত বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত শতকরা ৫১ শতাংশ বাঙালি সম্প্রদায় ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে অপবাদমূলক, মিথ্যা ও বানোয়াট কল্প কাহিনী তুলে ধরেন। তার বক্তব্যের মূল অংশ ছিল উগ্র সাম্প্রদায়িক। ১৯৯৬ সালের ১ মে সংসদে বাসন্তী চাকমা যে বক্তব্য রাখেন তা ছিল সম্পূর্ণ অসত্য। তার কথার কোন ভিত্তি নেই। সেদিন জেলার পানছড়িতে এরকম কোন ঘটনাই ঘটেনি। লিখিত বক্তব্যে মাঈন উদ্দিন বলেন, বাসন্তী চাকমা মনগড়া সংসদে বক্তব্য উপস্থাপন করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা বক্তব্যের মাধ্যমে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়ন কাজ করছে। তার বক্তব্যে তৎকালীন গেরিলা নেতা সন্তু লারমার শান্তি বাহিনীর খুনিদের ভাই সম্বোধন করলেও দেশপ্রেমিক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে খুনি ও বাঙালিদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করা হয়। এতে অভিযোগ করা হয়, বাসন্তী চাকমা সংসদে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ অমান্য করে শান্তি বাহিনী সৃষ্টির ইতিহাস তুলে না ধরে শান্তি বাহিনীর সদস্যদের নিজের ভাই বলে অসাম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগের লেভেল গায়ে দিয়ে ঘাপটি মেরে বসে থেকে মূলত সাম্প্রদায়িক আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলোর এজেন্ডা বাস্তবায়নের হাতিয়ার ছিলেন। যেই তিনি সংসদে যাবার সুযোগ পেলেন, সেই তিনি সরূপে ফিরে আসলেন বলে দাবি করেন সংগঠন দুটি। এতে বাসন্তী চাকমা শান্তি বাহিনীর কোন্দলে সন্তু ও প্রীতি গ্রুপের দ্বন্দ্বে বহু সাধারণ উপজাতীয়দের জীবননাশের কথা বললেও সুকৌশলে তিনি বাঙালি গণহত্যার কথা এড়িয়ে গিয়ে বাঙালিদের বহিরাগত ও সেটেলার বলে বাঙালি জনগোষ্ঠীকে উস্কে দিয়ে আবারও পাহাড়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করা হয়। ফলে সন্ত্রাসীদের আবারও পাহাড়ে রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতির দিকে উৎসাহিত করছেন। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনগুলোর নেতারা ৩ মার্চ খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের ডাক দেন। এছাড়া অবিলম্বে বাসন্তী চাকমা কর্তৃক সেনাবাহিনী ও পার্বত্য বাঙালিদের নিয়ে সংসদে দেওয়া মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনা ও সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ না করলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেয়।