দুর্নীতি করে গ্যাসের আবাসিক সংযোগ দেওয়ায় কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকাল ১১টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুই কর্মকর্তা হলেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস ডিভিশনের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সারওয়ার হোসেন ও সাবেক কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান।
এরআগে এ ঘটনায় দুদক সম্মিলিত-১ এর কর্মকর্তা শরীফ উদ্দীন বাদি হয়ে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন সাবেক ব্যবস্থাপক মো. মজিবুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সার্ভেয়ার মো. দিদারুল আলম এবং গ্রাহক মো. মুজিবুর রহমান।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকারি আদেশে আবাসিক খাতে নতুন ও বর্ধিত চুলায় গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে। সেই সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে আসামিরা একে অপরের যোগসাজসে তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধমূলক অসদাচরণের মাধ্যমে নুরজাহান বেগম নামে হালিশহরের এক আবাসিক গ্রাহকের ১২টি দ্বৈত চুলা ভিন্ন খতিয়ান ও দলিলের মালিকাধীন জায়গায় চান্দগাঁওয়ের আবাসিক ভবনে স্থানান্তর করেন।
যদিও খাতে গ্যাস বিপনণ নিয়মাবলী-২০১৪ এর ৯, ৩ এ হস্তাস্তুৰ/স্থানান্তর/একত্রীকরণ প্রসঙ্গে বলা আছে, কোন গ্রাহকের জন্য বরাদ্দকৃত শুধুমাত্র গ্যাস লোড অন্য কোন গ্রাহকের কাছে হস্তান্তর কিংবা বিক্রি করা যাবে না, যৌক্তিক কোনো কারণে গ্যাস সংযোগ স্থান পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে মালিকানা অপরিবর্তিত রেখে প্রস্তাবিত স্থানে গ্যাস সংযোগ করা যাবে। আবার কোন গ্রাহক যদি স্থায়ীভাবে সংযোগ বন্ধ করার ঘোষণা দিলে গ্যাস লোড বিতরণ কোম্পানীর কাছে সমর্পিত করতে হবে। অথচ অভিযুক্তরা মূল মালিক না হওয়া স্বত্তেও আলাদা রাইজারের মাধ্যমে খতিয়ান ও দলিলের জায়গার অন্য মালিককে ২২টি গ্যাস সংযোগ প্রদান করে।
এজাহারে ঘটনার সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে, মৃত এম এ সালাম নামে একজন গ্রাহক তার বাড়ির আঙিনায় স্থাপিত ১৮টি দ্বৈত চুলার মধ্যে ৬টি দ্বৈত চুলা রেখে ১২টি দ্বৈত চুলা চান্দগাঁওয়ের সানোয়ার আবাসিক এলাকায় স্থানান্তরের আবেদন করেন। ২০১৬ সালের অক্টোবরের ২৫ তারিখ আবাসিক খাতে স্থানান্তরে নিরুৎসাহিত করুন মর্মে আবেদনটি কেজিডিসিএলের তৎকালীন উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয়-দক্ষিণ) প্রকৌশলী মো. সারওয়ার হোসেন আবেদনটি ফিরিয়ে দেন।
পরে মৃত এম এ সালাম নামে ওই গ্রাহকের স্ত্রী নুরজাহান সালামের নাম ব্যবহার করে তৎকালীন ডিজিএম মো. সারওয়ার হোসেন ভুয়া আবেদনপত্র ও দলিল সৃজন করে একে অপরের যোগসাজসে জাল দলিল সৃজন করে তথ্য জরিপকারী মো. দিদারুল আলম জরিপ করে স্থানান্তরের সুপারিশ করে।
ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে ডিজিএমের অবৈধ নির্দেশনায় তার নিচের কর্মকর্তাগণ মো. মুজিবুর রহমানের নামে স্থানান্তরের জন্য অনুমোদন করেন। অন্যদিকে অভিযুক্ত উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয়-উত্তর) চাহিদাপত্র প্রদানের অনুমতি দেন।
দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দীন জানান,দুর্নীতি করে জালিয়াতির মাধ্যমে গ্যাস সংযোগ দেওয়ায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় সাবেক এবং বর্তমান একজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
Discussion about this post