অন্তর আহম্মেদ নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় চলতি আমন মৌসুমে চাল সংগ্রহ-২০১৮-১৯ চাল সংগ্রহের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রোববার দুপুরে নওগাঁ সদর গুদামের আয়োজনে সদর খাদ্য গুদামে এ চাল সংগ্রহের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন, প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান। জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে সদর ও মহাদেবপুর উপজেলায় আমনের সুষম বন্টন না হওয়ায় মিলাররা দ্বিধাদ্বন্দে ভুগছেন। সুষম বন্টনের দাবী জানিয়েছেন হাসকিং চালকল মালিকরা। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৩৬ টাকা কেজি দরে জেলায় ৩৬ হাজার ৩৫ মেট্রিকটন চাল সংগ্রহ করা হবে। চলবে আগামী বছরের ২৮ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত। সদর খাদ্য গুদামের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ২৫১ মেট্রিকটন। জানাগেছে, জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় ৩১৪ টি চালকলের মধ্যে ২১টি অটো রাইচ মিল। সদর উপজেলায় ৩৫২ টি চালকলের মধ্যে অটো রাইচমিল ২২টি। এ দুই উপজেলায় অটো রাইচ মিলের সংখ্যা বেশি হওয়ায় হাসকিং চালকল মালিকরা প্রতিমিলে বরাদ্দ পেয়েছেন ৮ মেট্রিক টন। অটো রাইচ মিলাররা পেয়েছেন ধারনক্ষমতা অনুযায়ী সর্বনি¤œ ২শ মেট্রিক টন থেকে অধিক বরাদ্দ। কিন্তু অন্যান্য উপজেলার হাসকিং চালকল মালিকরা পেয়েছেন ৩৫-৪০ মেট্রিক টন। ফলে এ দুই উপজেলার হাসকিং চালকল মালিকরা বৈষম্যে শিকার হচ্ছেন। এতে করে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বলে দাবী করেন তারা। বেলকন গ্রুপের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বলেন, জেলায় যে বরাদ্দ আসছে সেটা যথেষ্ট নয়। অটো রাইচ মিল চলে ২৪ ঘন্টা। সেখানে আমরা বরাদ্দ পাচ্ছি ৮ ঘন্টার। সঠিক বরাদ্দ দেয়ার দাবী জানান তিনি। উদ্বোধনী দিনে তিনি চুক্তিবদ্ধ ৩৬ টনের চালের বিপরীতে ১২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার চেক পেয়েছেন। নওগাঁ জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, জেলায় ব্যাপক চাল উৎপাদন হয়। প্রত্যেক মিলের একটা ধারণ ক্ষমতা আছে। সে অনুযায়ী উপর থেকে বরাদ্দ আসছে। তিনটি ভাগে (ধানের উৎপাদন, মিলের উৎপাদন ক্ষমতা ও বিলি বন্টন) বরাদ্দ আসে। সদর উপজেলা ও মহাদেবপুর উপজেলার হাসকিং চালকলের জন্য বরাদ্দ কম আসছে। যেখানে আমাদের কিছু করার নাই। মহাদেবপুর উপজেলার স্বরসতীপুর বাজারে আলহাজ্ব দছির উদ্দিন চালকলের মালিক এশরাক হোসেন বলেন, অন্যান্য উপজেলার হাসকিং চালকল মালিকরা বরাদ্দ পেয়েছেন ৩৫-৪০ মেট্রিক টন। সেখানে আমরা পেয়েছি মাত্র ৮ মেট্রিকটন। সব বরাদ্দ অটো রাইচ মিলারদের দেয়া হয়েছে। ফলে আমরা বৈষম্যে শিকার হয়েছি। নওগাঁ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কামাল হোসেন বলেন, দুই উপজেলার চাল বন্টনের বিষয়টি নিয়ে আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। এছাড়া চালকল মালিকদের পুরাতন কোন চাল সর্টার করে সরবরাহ না করার জন্য অনুরোধ করেন। যদি কেউ এরকম করে তাহলে আগামী ১৫ বছরের জন্য ব্লাক লিস্টে রাখা হবে বলে হুশিয়ারী করে দেন। পরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রকিবুল আকতার, বেলকন গ্রæপের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দুলাল উদ্দিন, সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাজের হোসেন, খাদ্য গুদাম ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা কাইয়ুম উদ্দিন, জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারন সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার। এসময় খাদ্য অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ এবং বিভিন্ন চালকলের মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।