৭১ বাংলাদেশ প্রতিবেদকঃচট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের মহানগর প্রধানসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ প্রচারপত্র, নগদ দুই লাখ ৮২ হাজার টাকা, দুটি ল্যাপটপ, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও ট্রেনিং ম্যানুয়াল উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতার ১৫জন হলেন- ওয়ালিদ ইবনে নাজিম (১৮), ইমতিয়াজ ইমাইল (২৫), আবদুল্লাহ আল মাহফুজ (৩০), আবুল মোহাম্মদ এরশাদুল আলম (৩৯), নাছির উদ্দিন চৌধুরী (২২০, নাজমুল হুদা (২৭), লোকমান গণি (২৯), মো. করিম (২৭), আবদুল্লাহ আল মুনিম (২২), কামরুল হাসান রানা (২০), আরিফুল ইসলাম (২০), আজিম উদ্দিন (৩১), আজিমুল হুদা (২৪), ফারহান বিন ফরিদ (২৩) এবং মো. স¤্রাট (২২)।
এরমধ্যে আবুল মোহাম্মদ এরশাদুল আলম হিযবুতের আঞ্চলিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
শুক্রবার দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সিএমপির দক্ষিণ জোন নগরীর আন্দরিকল্লা শাহী জামে মসজিদ, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, বায়েজিদ এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
শনিবার সকালে সিএমপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) আমেনা বেগম।
তিনি বলেন, ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনটি এখনও সক্রিয়। গ্রেফতার হওয়াদের মধ্যে অনেকেই শিক্ষার্থী। তাদের পরিবারের সদস্যরা জানত, তারা বিভিন্ন বিষয়ের কোচিং করার জন্য বাসা থেকে বের হচ্ছে। কিন্তু তারা হিযবুতের কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ছিল।’
তিনি জানান, নগরীর আন্দরকিল্লা জামে মসজিদে শুক্রবার মুসিল্লির নিকট লিফলেট বিতরণের সময় হাতেনাতে গ্রেফতার হয় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহ্রীর উলাই’য়াহ বাংলাদেশ এর দুই সদস্য ওয়ালিদ ইবনে নাজিম ও মো. ইমতিয়াজ ইসমাঈল। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আব্দুল্লা মাহফুজের বাসা নগরীর নিউ চান্দগাঁও আবাসিকে অভিযান চালিয়ে গোপন বৈঠক থেকে ১১ জঙ্গি গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে নগরীর পাঁচলাইশ বদিউল আলম গলিতে অভিযান চালিয়ে ফরহান বিন ফরিদ প্রকাশ রাফি ও বায়েজিদ মোজাফ্ফরন নগর থেকে আফজাল হোসেন প্রকাশ আতিকে গ্রেফতার করে।।
লিখিত বক্তব্যে সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) আমেনা বেগম বলেন, বিগত কিছুদিন যাবত কিছুদিন যাবত চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানাধিন আসকারদীঘি ও তার আশপাশ এলাকায় সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্রীর উলাইয়াহ বাংলাদেশ এর সদস্যরা পোস্টার লিফলেট বিলি করার ও লাগানো তথ্য পাওয়া যায়। পোস্টার লাগানো এলাকার আশপাশের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে হিযবুত তাহ্রীর উলাইয়াহ বাংলাদেশ এর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় সিএমপি কমিশনারের দিকনির্দেশনা ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দক্ষিণ এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আব্দুর রউফ এ নেতৃত্বে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ, প্রশাসন) পঙ্কজ বড়ুয়া, সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) নোবেল চাকমা, সহকারী পুলিশ কমিশনার (চকবাজার জোন) মোহাম্মদ রাইসুল ইসলাম, কোতয়ালী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহসিন, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান, এস আই সজল কান্তি দাস, মো. আব্দুর রব, কে এম তারিকুজ্জামান, এএসআই অনুপ কুমার বিশ্বাস, জয়নুল আবেদিন, নাসের আহমেদ, মোহাম্মদ রুহুল আমিন রণেশ বড়–য়াা।
এদিকে সিএমপি দক্ষিণ জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ আবদুর রউফ বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আবুল মোহাম্মদ এরশাদুল আলম (৩৯) হিযবুতের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার প্রধান। তিনি চট্টগ্রামের ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক।
গ্রেফতার আবদুল্লাহ আল মাহফুজ (৩০) নোভারটিস ফার্মাসিউটিক্যালসের চট্টগ্রামের টেরিটরি ম্যানেজার। তিনি হিযবুতের চট্টগ্রাম শাখার দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা বলে জানায় পুলিশ।