পুলিশ অফিসার নেয়ামত উল্লাহর ফেসবুক ওয়ালঃ- গত ৩০/১১/২০১৭ খ্রিস্টাব্দ তারিখ ভোরবেলা ঘুম ভাঙ্গল একটি মোবাইল কলে, কলটি ছিল একটি কালো হাইয়েচ গাড়ীর একটি গলাকাঁটা লাশ, শুরু হল তদন্ত, লাশের পরিচয় মিলল, হতভাগ্য আব্দুল হাকিম বয়স ৫৫ পেশায় হাইয়েচ চালক,গত ২৯/১১/২০১৭ খ্রিস্টাব্দ তারিখ বিকাল অনুমান ০৪:৩০ ঘটিকার সময় তিনজন যুবক চট্টগ্রাম শহরের লালদীঘির পাড় হইতে উক্ত গাড়ীটি ১১০০০ টাকায় কক্সবাজার আসা যাওয়ার জন্য ভাড়া নেয়। যথারীতি তাহারা কক্সবাজার যায় এবং ফেরত আসার পথে ড্রাইভারকে ছুরি ধরে গাড়ী থামাতে বাধ্য করে এবং ড্রাইভারকে টেনে পিছনে নিয়ে সিটের নিচে ফেলে জবাই করে,তারপর তারা গাড়ীটিকে ছিনতাই করে চালিয়ে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়ার পথে পটিয়া পোস্ট অফিসের মোড়ে গাড়ীর চাকা লক হয়ে যায়, অনুমান ৩০ মিনিট ছিনতাইকারী চক্র গাড়ীটিকে ঠেলে স্টার্ট নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে চালকের মৃতদেহ গাড়ীর ভিতরে রেখে চট্টগ্রামগামী বাসে করে চলে যায়। আমার পথচলা ছিল খুবই কঠিন, তথ্য সাহায্য চাইলাম সি এম পি ডিবির নিকট ,পিবিআই এর নিকট, কিন্তু আশাহত, আশানুরূপ কোন সহায়তা পেলামনা তবে আশ্বাস পেলাম। কি আর করা শুরু হল একলা চলরে। চলতে চলতে একসময় আকাঙ্খিত গন্তব্যের সন্ধ্যান মিলল। এবার অভিযানের পালা, দুহাত সম্প্রসারিত করে উদারভাবে সহযোগিতা করলেন ডিসি ডিবি জনাব মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ পি পি এম ।দিলেন চৌকস অফিসার ইন্সপেক্টর আফতাব, এস আই শিবেন এস আই রাসিফকে। বিকাল থেকে শুরু করে পরদিন সকালে মিলল কাংখিত একজনকে, তারপর ডিবির প্রস্থান, আমি রয়ে গেলাম, চলল জিজ্ঞাসাবাদ বেরিয়ে এল তথ্য। আবার ডিসি স্যারের নিকট চাইলাম, এবার পাঠালেন ইন্সপেক্টর জহিরকে, শুরু হল আবার অভিযান গ্রেফতার হল আরো একজন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মিলল আরেকজনের সন্ধ্যান, আবার ডিবির প্রস্থান এইবার চট্টগ্রাম ছেড়ে সিরাজগন্জ মিলল আরো একজনকে ফের চট্টগ্রামে দুইজনকে পাঠালাম বিজ্ঞ আদালতে দুইজন দিল স্বীকারাক্তিমুলক জবানবন্দি , অভিযানে আরো একজনকে আটক করা হল চট্টগ্রাম থেকে, এই দুইজনকেও পাঠালাম বিজ্ঞ আদালতে তারাও দিল ১৬৪ ধারায় স্বীকারাক্তিমূলক জবানবন্দি। একে একে মিলল মুল হোতা, জবাইকারী. চালক। আমার পটিয়ার অভিযানে আমার সহিত সার্বক্ষণিক অভিযানে ছিলেন ইন্সপেক্টর তদন্ত জনাব রেজাউল করিম, এস আই সাজ্জাদ হোসেন, এস আই বাসুদেবনাথ, এস আই আরিফুর রহমান সরকার সহ অফিসার ও ফোর্স। আর অভিযানের সার্বিক তদারকিতে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(দক্ষিণ) এ কে এম এমরান ভূঁইয়া। সংবাদ গেল নিহতের ছেলে মামলার বাদীর নিকট অদ্য ০৬/০২/২০১৮ তারিখে নিহতের ছেলে পারভেজ, গাড়ীর মালিক বশির ভাই, মালিক সমিতির নেতা খলিলুর রহমান, সাথে নিয়ে আসলেন মিষ্টি। জোর করে খাইয়ে দিলেন আর বারবার পুলিশের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে থাকলেন, কে বলে মানুষ পুলিশকে ঘৃণা করে? কে বলে মানুষ ভালবাসতে জানেনা? দেখুনতো ভালবাসা কি খাঁটি ছিল নাকি ভেঁজাল? ধন্যবাদ টিম পটিয়া, প্রমাণ করলে চেষ্টার অসাধ্য কিছুই নেই।কৃতজ্ঞতা ডিসি ডিবি স্যার এর নিকট, ধন্যবাদ ডিবির অফিসারদের।
পুলিশ অফিসার নেয়ামত উল্লাহর ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া।
Discussion about this post