শেখ সেলিম-সম্পাদকীয়ঃপুলিশ বাহিনী জনগনের বন্ধু । জনগনের জন্য পুলিশ- পুলিশের জন্য জনগন নয় ।তাই নয় কি ? পুলিশের ভূমিকা যদি হয় বন্ধুর মতো,আর এক সত্য হলো এই যে, সমাজ ক্ষমতা প্রয়োগকারীদের ভয় করে নিশ্চয়ই তাই নয় কি ? কিন্তু সম্মান করে না, উল্টো বিরূপ দৃষ্টিতে দেখে। আমাদের পুলিশ বাহিনীকে আমরা ফোর্স হিসেবে দেখতে চাইব না, দেশের মানুষ যে মুক্তির জন্য সংগ্রাম করছে, যে সংগ্রামে পুলিশ বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল অংশগ্রহণ ছিল, সেটির সঙ্গে বল প্রয়োগকারীর ভাবমূর্তি সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাহলে কি আমরা চাইব, পুলিশ সমাজের জন্য সেবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হোক? না, তা-ও নয়। আমরা চাইব পুলিশ ফোর্স নয়, সেবকও নয়, হোক মানুষের বন্ধু। ফোর্স কেন নয়, সেটা তো বোঝা গেল; কিন্তু সেবক নয় কেন? সে ব্যাপারে আপত্তির হেতুটা কী? প্রধান হেতু এটি যে, পুলিশ বাহিনীর কাজ সমাজসেবা নয়। সেবামূলক কাজ পুলিশ অবশ্যই করবে, দৃষ্টিহীন পথচারীকে রাস্তা পার হতে সাহায্য করা, বিপন্ন মানুষকে উদ্ধার করা, দুর্ঘটনা দেখলে এগিয়ে আসা, দুর্বৃত্তদের বিতাড়িত করা- এ ধরনের কাজ পুলিশের কাছ থেকে সর্বদাই প্রত্যাশিত, কিন্তু পুলিশের মূল কাজটা হচ্ছে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। অপরাধীরা মানুষের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, মানুষকে তারা বিপন্ন করে, তারা বড়-ছোট নানা ধরনের অপরাধে লিপ্ত থাকে, পুলিশের কাজ এই অপরাধীদের দমন করা। কেবল দমন করা নয়, সেই সঙ্গে অপরাধ যাতে না ঘটে তার জন্য সামাজিক ক্ষেত্র তৈরিতে সহায়তা দেওয়া, নিরীহ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো। এগুলোর কোনোটাই সমাজসেবার পর্যায়ে পড়ে না। এগুলো হচ্ছে বন্ধুর মতো দায়িত্ব পালন।পুলিশকে মানুষ দেখতে চায় এমন বাহিনী হিসেবে, যেটি ভীতির বা সন্দেহের উদ্রেক করবে না, বরঞ্চ করবে নিরাপত্তাবোধের। থানাকে মানুষ ভাবতে চায় আপদ-বিপদের ভরসাস্থল এবং দুর্বৃত্তদের নিবৃত্তকরণের কেন্দ্র হিসেবে। অপরাধ দমনের কাজ তো থাকবেই, সেটা তো প্রধান দায়িত্ব পুলিশের। কিন্তু এই কাজেও সামাজিক সহযোগিতা পাওয়া যায়, পুলিশের ভূমিকা যদি হয় বন্ধুর মতো।পুলিশ বাহিনী ও জনগন ভাই ভাই, প্রত্যাশাগুলো এ রকমেরই।এই লেখাটি পড়ে যদি কাহারো উপকারে আসে, সেটি হবে- দৈনিক ৭১ বাংলাদেশ এর সফলতা -ধন্যবাদান্তে সম্পাদক শেখ সেলিম ।
Discussion about this post