মোঃ তাজুল ইসলাম মিয়াজী,ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কঃএবার নির্বাচনকে কঠিনভাবে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, একতরফা নির্বাচন হতে দেয়া হবে না ।
বাংলাদেশের একাদশ সংসদ নির্বাচন কঠিনভাবে নিয়েছে এবং নির্বাচন প্রশ্নে অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও ওয়াশিংটনের উড্রোউইলসন সেন্টারের সিনিয়র স্কলার উইলিয়াম বি মাইলাম।
বাংলাদেশের একাদশ সংসদ নির্বাচন কঠিনভাবে নিয়েছে এবং নির্বাচন প্রশ্নে অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও ওয়াশিংটনের উড্রোউইলসন সেন্টারের সিনিয়র স্কলার উইলিয়াম বি মাইলাম।
স্থানীয় সময় গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে সেমিনারে মাইলাম বক্তৃতা করছিলেন।
হার্ভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন কাউন্সিলের (আইআরসি) সহায়তায় ‘ইমপ্লিকেশন্স অব টার্গেটিং মিডিয়া এন্ড জার্নালিস্টস অন হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেমোক্রেসি’ শীর্ষক ওই সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স অব নর্থ আমেরিকা (বিডিপিএএনএ)।
সেমিনারে উইলিয়াম বি মাইলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে বেশ কঠিনভাবে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসন চায় নির্বাচনটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং সবার অংশগ্রহণে হোক। এতে জনগণের ইচ্ছার সত্যিকারের প্রতিফলন ঘটুক।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি- বৈশ্বিক কর্তৃত্ববাদের যে ছায়া বাংলাদেশের ওপর পড়েছে সেটি পরাজিত হবে, বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সংসদ এবং সামগ্রিকভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পুনঃপ্রবর্তন হবে।
ঢাকায় দায়িত্বপালনকারী এই সাবেক রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি এখানে আসার আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়ার চেষ্টা করেছি। তারা আমাকে যেটা বলেছেন তা হল- এ নির্বাচন প্রশ্নে অত্যন্ত শক্ত অবস্থানে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।
দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে বর্তমানে গবেষণাকারী মাইলাম বলেন, ‘আশা করি নির্বাচনটি একতরফা হবে না, যদি হয় তবে তা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বেই কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। বাংলাদেশের গত ১০ বছর ধরে এমন শাসন ব্যবস্থা প্রসারিত হতে চলেছে। বিশ্বব্যাপী এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো জরুরি।
এ দেশের অনেকের সঙ্গে তার ঘণিষ্ঠ যোগাযোগ এবং ব্যক্তিগতভাবে তিনি অনেককে চিনেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি ভয়ের সংস্কৃতি চালু হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনীতি এবং শাসন পরিচালনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির অনেক ভুল ছিল মন্তব্য করে মার্কিন ওই কূটনীতিক বলেন, ‘তারা তাদের শাসনামলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালীকরণে ব্যর্থ হয়েছে। আমি মনে করি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে পড়ার জন্য তারাও দায়ী। তবে এখন যেটি হচ্ছে তার অবস্থা আরও খারাপ ।
মার্কিন ওই কূটনীতিক ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অংশ না নেয়ার তীব্র সমালোচনা করেন। বলেন, ‘এটিও বিএনপি জোটের বড় ভুল ছিল। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যতই প্রভাব বিস্তারিত করুক না কেন, তারপরও বিএনপি এটি বর্জন না করে অংশ নিলে অন্তত ১০০ আসনে জয়ী হতো।
সরকারি দল একতরফাভাবে কিছুই করতে পারতো না। অন্তত একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পথে যেতে পারতো না। বিশেষ করে মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে সরকার যে ডিজিটাল আইন করেছে এমন জনবিরোধী আইনগুলো প্রণয়নে বিরোধীরা সংসদে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারতো।
মাইলাম বলেন, আমি বাংলাদেশে গিয়েছিলাম এ অবস্থার অবসানের জন্য বিশেষ করে সরকারের বিরুদ্ধে এক সুরে প্রতিবাদের জন্য মধ্যম ডান ও মধ্যম বাম দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির ঐক্য হয়েছে। জোটের মধ্যে ভিন্নমত ও ভিন্ন ধারা রয়েছে কিন্তু তারপরও তারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।
মাইলাম কারও নাম না নিয়ে বলেন, ‘এটা ভাল খবর ওই জোটে আমি অনেককে দেখছি যারা একাত্তরে বাংলাদেশের জন্মের সময় এগিয়ে এসেছিলেন। বাংলাদেশ সৃষ্টিতে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আমি দেখেছি।
সেখানে অনেকে আমার বয়সী, অনেকে আমারে চেয়েও বয়োজ্যেষ্ঠ। শুধু তাই নয় ’৯০-এ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তাদের ভূমিকা ছিল। এবারও তারা এগিয়ে এসেছেন। মাঠে নেমেছেন। আমি তাদের দেখেছি- তারা জোটবদ্ধ হয়েছে একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য।