চট্টগ্রামের গণ মানুষের প্রাণের দাবি অবিলম্বে কর্ণফুলীর দ্বিতীয় সড়ক সেতু নির্মাণ আবু নাঈম (চট্টগ্রাম):- আকাশ ফেটে কান্নার মত বৃষ্টি দিয়ে পালন হল অনশন। সেতুর বাস্তবায়নে প্রয়োজনে জীবন ত্যাগ করার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা । ৬ জুলাই শনিবার পূর্ব কালুরঘাটে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. হারুন মিয়ার সভাপতিত্বে কোর’আন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বোয়ালখালী ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের গণ মানুষের প্রাণের দাবি অবিলম্বে কর্ণফুলীর দ্বিতীয় সড়ক সেতু নির্মাণ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে বোয়ালখালী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের অনশন পালিত হয়। বেলা আড়াই টায় অনশন ভাঙ্গান চট্টগ্রাম ৮ আসনের সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন বাদল।পরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্বারক লিপি প্রদান ও কবিগানের আসর অনুষ্টিত হয়। এতে চট্টগ্রাম ৮ আসনের সাংসদ মঈন উদ্দিন খান বাদল বলেন, আজকের সভায় আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় একসাথে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলাম সেই সাথিরা অনেশন করছে,এর চেয়ে বড় সহযোগীতা আমার কাছে নেই, আমার কথা বলতে সমস্যা হচ্ছে,আমি কয়েকটা কথা এলাকা বাসিকে বলতে চাই, যাতে আপনারা এ কথা গুলো সারা বাংলার মানুষকে বলতে পারেন। আজকে যারা সাংবাদিক আছেন সাংবাদিক বন্ধুদের বলছি, তারা আমাদের আপন আত্মীয়, এই ব্রিজ করার প্রতিশ্রুতি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন ২০০৮ সালে। সাংবাদিকরা পত্রপত্রিকা ঘাইটা দেখেন। এই একই প্রতিশ্রুতি তিনি ব্যক্ত করেছেন ২০১০ সালে এটা আমার প্রতিশ্রুতি না,এটা পত্রিকায় লেখেন। এটা আমার প্রতিশ্রুতি না,এটা ওনার প্রতিশ্রুতি, এটা বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতিশ্রুতি। ২০০৮,২০১০ সালে ওনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমি অবশ্যই কালুরঘাট রেল কাম সেতু করব। এটাই বাংলাদেশের একমাত্র প্রকল্প যেটা ৪বার জরিপ হয়েছে। এই জরিপ করেছেন অষ্ট্রেলিয়ান, তাইওয়ান, বাংলাদেশি ও দক্ষিণ কোরিয়ানরা। এর আগে বাংলাদেশের কোন ব্রিজ চারবার জরিপ হয় নি। অনেকে সুন্দর সুন্দর কথা শুনা যাচ্ছে অনেকে বলছে, ব্রীজ তো একসময় হবে এখন না হলেই তো চলে আমি বললাম কেন? বলে আপনাদের তো চট্টগ্রাম টানেল আছে! আমি বললাম আরে ভাই চট্টগ্রাম টানেল বোয়ালখালী থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে। আবার অরেকজন বলে আপনাদের তো শাহ আমানত ব্রীজ আছে তারে বলি আমার বোয়ালখালী বাসি শাহ আমানত ব্রীজ দিয়ে একজনও যায় না আর শাহ আমানত ব্রীজও তো আমাদের থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে। দক্ষিণ কোরিয়ানরা বলছে কর্ণফুলী সেতু ৮০ মিটার উঁচু হয়েছে বলে বিশাল বাকলিয়ার চর হয়ে গেছে। এর উপর যদি দুইটা আলাদা ব্রীজ হয় পানী কোথায় থাকবে। আমরা রেল সেতু আর সড়ক সেতু আলাদা চাই না, প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝানো হয়েছে, এখানে যদি একটা রেল সেতু একটা রোড সেতু হয়, কর্ণফুলী নদীটাতো শেষ হয়ে মরে যাবে। আমরা বোয়ালখালী বাসী আমরা দক্ষিণ চট্টগ্রাম বাসি এটা চাই না। কয়েকদিন আগে একটি পরিবার প্রথম সন্তান প্রসব করেছে বোয়ালখালী উপজেলা হাসপাতালে অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় সেখান থেকে শহরে (চমেক) যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় পথে ব্রীজ পর্যন্ত বাচ্চাটি বেঁচে ছিলো, ওপারে যখন গেল দেখল বাচ্চাটির কোন সাড়াশব্দ নেই। ব্রীজের এপারে একটি বাচ্চা জীবিত ছিলো আর ওপারে গিয়ে মৃত, এই দুঃখ আমি বাংলাদেশের কার কাছে বোঝাবো। সেই কারণে আমি পার্লামেন্টে বলেছি এ বছর ব্রীজের কাজ শুরু না হলে আমি সংসদ থেকে বের হয়ে যাবো। সাংবাদিকরা লিখুন, আমরা দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ কি দোষ করেছি। আমি এদিন নেত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম ওনি আমারে বলছে আপনি অসুস্থ শরীর নিয়ে কেন আসছেন? কি দরকার আমি বললাম, আপনাকে দেখতে এসেছি কোন দরকার না আপনি শুধু আমার ব্রীজটা করে দেন। আমার মৃত্যুর আগে যদি ব্রীজটা না দেখি আমার রুহ থেকে অভিশাপ আসবে। আমার ব্রীজটা করে দেন,আমি আর কিছু চাই না। ভুলে গেলে হবে না কালুরঘাট থেকেই স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পক্ষে জিয়াউর রহমান এই স্বাধীনতার ঘোষণা করেন, ইতিহাসটা তো কেউ মুছতে পারবেনা। আমরা উত্তেজিত হতে চাই না। এই ব্রীজে মানুষ মারা যাওয়ার জন্য আমরা মুক্তিযুদ্ধ করিনি। আরেকটা কথা বলে রাখি বোয়ালখালীর মানুষরাও চাই এই রেল কাম সেতুর নামকরণ করা হবে শেখ হাসিনা রেল কাম সড়ক সেতু নামে। যেহেতু তিনি বাংলাদেশে অনেক উন্নয়ন করেছেন। উক্ত অনশন কর্মসূচির সাথে একাত্বতা জানিয়ে বক্তব্য দেন সাতকানিয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার এলএমজি তাহের, বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এস এম সেলিম, মুক্তিযোদ্ধা আহমদ হোসেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামীগ নেতা রেজাউল করিম বাবুল,বোয়ালখালী উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক সৈয়দুল আলম, চট্টগ্রাম নাগরিক সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক কবি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বোয়ালখালী- কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক আবদুল মোবিন,উপজেলা জাসদ সভাপতি মনির উদ্দিন খান, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত কচি। অনশনে আরো সংহতি প্রকাশ করেন বোয়ালখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, এডভোকেট সেলিম, কালের কন্ঠ প্রতিনিধি কাজী আয়েশা ফারজানা, বোয়ালখালী সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, বিজয় টিভি প্রতিনিধি এস.এম.নাঈম উদ্দীন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ বোয়ালখালী শাখার সভাপতি শ্যামল বিশ্বাস,সিনিয়র সহ-সভাপতি সমীর চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক অধীর দে, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান মহিলা ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি রমা বৈদ্য ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ইলা বড়ুয়া প্রমুখ।
Discussion about this post