সম্পাদকীয়ঃতাওবার দরজা খোলা:বেশি বেশি তাওবা ও ইস্তিগফার করে নিজেদের অন্তর থেকে গুনাহের জং দূরীভূত করতে থাকা উচিত। সাওয়াবের প্রত্যাশায় হিসাব-নিকাশ করতে থাকা। যাতে দুনিয়া,আখিরাতের সফলতা ও কামিয়াবি দ্বারা সাফল্য অর্জন করা যায়। কেননা তাওবার দ্বার সব সময় উন্মুক্ত।
আল্লাহ তাআলার কুদরতি হাত আমাদের মাফ দেওয়ার জন্য সব সময়ই অগ্রসরমাণ। এ মর্মে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তাওবা করো; তবেই তোমরা নিঃসন্দেহে সফলতা লাভ করবে।’ (সুরা : নূর, আয়াত : ৩১)
অন্যত্র আল্লাহপাক বলেন, ‘যে গুনাহ করে কিংবা নিজের অনিষ্ট করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পায়।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১১০)
কিয়ামত পর্যন্ত তাওবা কবুল হবে। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, আবু মুসা আশআরি (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ রাতে তাঁর হাত মুবারক সম্প্রসারণ করেন, যাতে দিনের পাপীরা তাওবা করতে পারে। আবার দিনে তাঁর হাত মুবারক প্রসারিত করেন, যাতে রাতের পাপীরা তাওবা করতে পারে। এ অবস্থা সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হওয়া (কিয়ামত) পর্যন্ত চলতে থাকবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৭৫৯)
দৈনিক ৭০ বার তাওবা করলেও মাফের আশ্বাস আছে। আবু বকর সিদ্দিক (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলে কারিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইস্তিগফার করে (গুনাহে লিপ্ত হওয়ার পর লজ্জিত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করা) পরে তাওবা করে, তবে তা বারবার হিসাবে গণ্য হবে না; যদিও সে ব্যক্তি দৈনিক ৭০ বারও এরূপ করে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫১৪)
আরেকটি হাদিসে আছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা করো এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭০৩৪)
মৃত্যু পর্যন্ত তাওবা কবুলের সুযোগ আছে। এ প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলে আকরাম (সা.) বলেছেন, ‘রুহ গলদেশে এসে আটকাবার পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহপাক বান্দার তাওবা কবুল করেন।’ (মিশকাত, হাদিস : ২৩৪৩)
তাওবার বরকত:তাওবা ও ইস্তিগফারে লেগে থাকলে দুনিয়ায় সুখ-শান্তি, নিরাপত্তা, শারীরিক সুস্থতা ও আত্মতৃপ্তি লাভ করা যায়। আর আখিরাতের ফায়দা ও বরকত তো আছেই। নূহ (আ.)-এর ভাষায় পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘অতঃপর বলেছি, তোমরা তোমাদের পালনকর্তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দেবেন, তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্য উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের জন্য নদী-নালা প্রবাহিত করবেন।’ (সুরা : নূহ, আয়াত : ১০-১২