নগরবাসী স্ট্র্যান্ড রোড নগরীর প্রধান বাণিজ্যিক সড়কগুলোর অন্যতম।এক সময়ে শহর এলাকার বাস চলাচল করতো এইপথে। আর এখন এইপথে তো বাস চলেই না, নাম শুনলে রিকশাচালকও ঘাড় ফিরিয়ে নেয়। রাত–দিন সমানে লেগে থাকে ট্রাকজট। এটাকে আরও প্রকট করে তুলেছে ৭টি স্কেল। বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে শুরু করে সদরঘাট পর্যন্ত নগরীর উত্তর–পূর্বদিকে বিস্তৃত ১.১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘের এই রাস্তা। প্রশস্ততা ছিল কোথাও ১৮ ফুট আর কোথাও ২২ ফুট। ২০১০ সালে সড়কটি সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন করা হয়। এরপর প্রশস্ততা দাঁড়ায় ৪৮ ফুট। কিন্তু এর কোন সুফল পাচ্ছেন না নগরীর মানুষ। সম্প্রসারণের পরও এই পথে রিকশা ও সিএনজি ট্যাক্সি এবং অন্যান্য যানবাহন সহজে চলাচল করতে পারছে না। পথচারীরাও নিরাপদে যাতায়াত করতে পারছে না। কাভার্ড ভ্যান, লং ভেহিক্যাল এবং ভাঙ্গাচোরা, লক্কড় ঝক্কর মার্কা শত শত ট্রাক রাস্তার পাশে পার্ক করে রাখা হয় এলোমেলোভাবে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে গোটা সড়কটাই যেন লং ভেহিক্যাল, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের টার্মিনাল। এই তিন ধরনের গাড়ি এমনভাবে রাস্তাটা বেদখল করে রাখে অন্য কোন যানবাহন বা পথচারীদের চলাচল সম্ভব হয় না। স্ট্র্যান্ড রোডের ৩টি গুদামের রয়েছে ওজন যন্ত্র ( স্কেল )। রাস্তার গাড়িজটকে আরও সংকটে ফেলেছে এগুলো। গুদাম থেকে মাল সরবরাহ নেয়ার জন্য খালি ট্রাক যখন প্রবেশ করে তখন একবার, আবার মালভর্তি করে বের হওয়ার সময় পুনরায় পরিমাপ হয় এই স্কেলে। এভাবে প্রবেশের সময় পেছনে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয় একের পর এক ট্রাকের। একই অবস্থা গুদাম থেকে মাল নিয়ে ফেরার সময়। তখন স্ট্র্যান্ড রোডের জটকে আরও মারাত্মক করে তোলে। সহজে আর এই জট খোলে না। রাস্তাটির দু’পাশে রয়েছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক অফিস, ব্যাংক ইত্যাদি। সেগুলোতে যাতায়াতকারীদের জটের মধ্যে আটকে থাকা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এই সড়কপাশে অবস্থিত এক অফিসের প্রধান নির্বাহী জানালেন, প্রায় প্রতিদিনই ট্রাকজটে আটকে কয়েক ঘণ্টা সময় নষ্ট হয় তাদের। বিশেষত সপ্তাহের প্রথম এবং শেষদিনে যে অসহনীয় দুর্দশায় পড়তে হয়। এই পথে যেসব ট্রাক চলাচল করে এগুলোর প্রায় সবগুলোই ফিটনেসবিহীন। রাস্তায় বিকল হয়ে পড়ে। আবার চালকরা নির্বিচারে যেখানে সেখানে ট্রাক পার্ক করে রাখে। যানবাহন পুলিশকে এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি জানান, অন্তত ৭টি স্কেল এই রাস্তার জট পরিস্থিতির অধিকতর অবনতি করে প্রতিদিন। তিনি অভিমত দেন যে হয় ওজনের জন্য বিকল্প কোন ব্যবস্থা নিতে হবে অথবা এই ওজন দেয়ার কাজের জেরে যাতে রাস্তায় গাড়ি চলাচলে সমস্যা বা জট না তা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে প্রতিনিয়ত ট্রাকজটের দুর্ভোগে পড়তে হবে। এদিকে, চালক ও মালিকদের কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা স্বীকার করেন যে প্রধানত তাদের ট্রাকের কারণে স্ট্র্যান্ড রোড অহরহ জটের কবলে পড়ে প্রতিদিন। কোন ট্রাক টার্মিনাল না থাকায় বাধ্য হয়ে তাদেরকে রাস্তার ওপর গাড়ি রাখতে হয় বলে জানান তারা।
Discussion about this post