বিশেষ প্রতিনিধিঃবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলী আহসান বলেছেন, বিএসএমএমইউ-তে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শঙ্কা মুক্ত নন। তার অবস্থা ওঠানামা করছে। এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি জানান। ওবায়দুল কাদেরের হৃদপিণ্ডের মূল ধমনীতে ৯৯ শতাংশ ব্লক ছিল বলে তার চিকিৎসক জানিয়েছেন।
অধ্যাপক আহসান দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘তার (ওবায়দুল কাদের) যে রক্তনালিটা সবচেয়ে বেশি ক্রিটিক্যাল ছিল, যেটার জন্য ওনার এ প্রবলেমটা হয়েছে আমরা শুধু সেটাই ঠিক করেছি। কিন্তু সেটা মনে হয় পর্যাপ্ত নয়। যেহেতু তিনটা নালি দরকার হয়, সবগুলোই সারানো দরকার। কিন্তু এ মুহূর্তে সেগুলো সারানো যাবে না।সরাতে গেলে আরো বিপদ ঘটবে।’
তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। এখন যদি বলেন যে এখন পাঠানো (বিদেশে পাঠানো) যাবে কি না, আমি বলব যে না। এখন পাঠানো যাচ্ছে না। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত আছে যে তার যেমন চিকিৎসা চলছে, সেটাসহ আরও সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। এর আগেও তার হার্ট অ্যাটাকের হিস্ট্রি ছিল।
এর আগে তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাসান মাহমুদ হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ওবায়দুল কাদেরকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের এখন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকরা।
ওবায়দুল কাদেরকে যে কারণে হাসপাতালে আনা হয়
ভোরে শ্বাসকষ্ট শুরু হবার পর তাকে দ্রুত শাহবাগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হয়। সেখানে আনার পর তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তখন তাকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালে আনার পর এনজিওগ্রাম করে চিকিৎসকরা তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক চিহ্নিত করেন।
হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান আহসান সকালে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ওবায়দুল কাদেরের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও তিনি পুরোপুরি শঙ্কা মুক্ত নন।
তিনি বলেন, ‘ওনার এনজিওগ্রাম করা হয়েছে। এনজিওগ্রামে দেখা গেছে তিনটা নালি ব্লক। একটা নালি খুলে দিছি।’
‘এখন মোটামুটি উনি স্থিতিশীল আছেন। স্থিতিশীল থাকলেও বলা যাবে না যে স্থিতিশীল। এটা যে কোনো মুহূর্তে আনস্ট্যাবল (অস্থিতিশীল) হয়ে যেতে পারে।’
হাসপাতালের ‘আইসিইউতে হার্ট অ্যাটাক’ হয় কাদেরের
এদিকে দুপুরে ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা নিয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতা সেখানে উপস্থিতি ছিলেন।
অধ্যাপক বড়ুয়া বলেন, ‘ওনার একটু শ্বাসকষ্ট হয়েছিল। এই শ্বাস কষ্ট নিয়ে আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে উনি সকাল পৌনে আটটায় আসেন।’
‘আমরা আইসিইউতে নিয়ে যাই। আইসিইউতি চিকিৎসা দিতে দিতেই ওনার একটা হার্ট অ্যাটাক হয়। সে হার্ট অ্যাটাকের জন্য কোথায় কী হলো না হলো সেটা দেখার জন্য এনজিওগ্রাম করা হয়।’
‘এরপর একটা স্ট্যান্টিং করে দেয়া হয়। তার পরবর্তীতে উনি এখন স্ট্যাবল (স্থিতিশীল)।’