নির্দিষ্ট টাকা দিলেই ট্রাফিক পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায় আইনভঙ্গের মামলার স্লিপ।
যাতে লেখা থাকে-গাড়ির কাগজপত্র পুলিশের কাছে জমা, মামলা চলছে। ফলে গাড়ির কোনো প্রকার কাগজপত্র না থাকলেও মামলার ওই স্লিপ নিয়ে পুরো দেশ বেড়ানো সম্ভব। পুলিশ ওই গাড়ি ধরবে না।
প্রসিকিউশন স্লিপ বই বা কেইসস্লিপ বইয়ের অপব্যবহার করে ‘মান্থলি মামলা’নামের এই ধরনের মিথ্যা মামলার প্রচলন আছে চট্টগ্রামেও।
নিয়ম অনুযায়ী ২১ দিনের মধ্যে কেইসস্লিপ নিষ্পত্তি হওয়ার কথা। কিন্তু তা দেড় বছরেও নিষ্পত্তি না হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
‘মান্থলি মামলা’ নামের ভুয়া মামলার কাগজ দেওয়ার ফলে স্লিপবইয়ের অফিসকপি ট্রাফিক কার্যালয়ে জমা না দিয়ে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তা গায়েব করে ফেলেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানায় নগরের বিভিন্ন স্পটে ১৮০ জনের মতো সার্জেন্ট দায়িত্ব পালন করছেন। এরা প্রত্যেকে মাসে গড়ে একশ’ থেকে চারশ’ কেইসস্লিপ নিয়ন্ত্রণ করেন। ২৮ দিন মেয়াদের প্রতি কেইসস্লিপ থেকে গ্রহণ করছেন ১ হাজার থেকে সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা। প্রতি কেইসস্লিপের বিপরীতে সরকারের রাজস্ব খাতে দেড়-দুইশ’ টাকা জমা দিয়ে বাকি টাকা তারা পকেটস্থ করছেন। এক হাজার টাকা করে গড়ে ২০০ কেইসস্লিপ হিসাব করলেও ১৮০ সার্জেন্ট এ খাতে মাসে বাণিজ্য করেন অন্তত প্রায় কোটি টাকা। স্লিপবাণিজ্য নির্বিঘ্ন করতে ক্ষেত্রবিশেষে ট্রাফিক বিভাগের পদস্থ কর্মকর্তাদেরও ‘ম্যানেজ’ করতে হয় বলে জানা গেছে।
এদিকে, ২৮ দিন পরপর ১ থেকে দেড় হাজার টাকায় কেইসস্লিপ নিয়ে রাজপথ ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ থাকায় অনেকেই বিআরটিএ গিয়ে সরকারের নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে ট্যাক্স টোকেন, ফিটনেস সার্টিফিকেটসহ যানবাহনের কাগজপত্র আপডেট রাখার প্রয়োজন মনে করেন না। ফলে এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে সরকারের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে।
একশ্রেণীর ট্রাফিক পুলিশের পকেটে এভাবে বছরের পর বছর কেইসস্লিপ খাতে কোটি টাকা ঢুকলেও বিআরটিএ তথা সরকার বছরে শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
Discussion about this post