মোঃ ফয়সাল এলাহীঃ চট্রগ্রাম নগরীর লাভলেনস্থ মাদানি মসজিদের তাবলিগ জামাতের উত্তেজনার আশংকায় গতকাল পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তাবলীগ জামাতের দুই শুরা সদস্যের আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশ মোতায়েন ছিল বলে জানা গেছে। গতকাল বৃহষ্পতিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল মসজিদের সামনে অবস্থান নেয়। বিষয়টি পুলিশ ও হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ নিশ্চিত করেছেন। তবে মুসল্লিদের মধ্যে কিছুটা শঙ্কা ছিল বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকা অনুষ্ঠিত গত বিশ ইজতেমায় তাবলিগ জামাতের মধ্যে বিভক্তির কারণে হেফাজতে ইসলামের আমীর মাওলানা আহমেদ শফি তবলিগ জামাতে বিভক্তির আশংকায় মাদানি মসজিদ মারকাজে ৮ সদস্যের একটি শুরা কমিটি গঠন করে দেন। এ তাবলিগ গ্রুপ বিশ্ব তাবলিগের আমীর মাওলানা সাদ কান্ধলভীর নেতৃত্বের প্রতি আস্থাহীন বলে জানা গেছে। আল্লামা আহমদ সফির করে দেয়া ৮ সদস্যের শূরা কমিটির গতকাল বৃহস্পতিবার লাভলেন মসজিদে প্রবেশের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার আশংকা তৈরি হয়। খবর পেয়ে কোতোয়ালী থানার পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়। এর আগে গতকাল সকালে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার বরাবরে লাভলেন মাদানি মসজিদ তবলিগ মার্কাসে বহিরাগত হস্তক্ষেপ ও শাস্তিভঙ্গের আশঙ্কা করে একটি আবেদন করে মসজিদের বর্তমান শূরা কমিটি। আবুল কালাম আজাদ ও আবদুল হালিমের করা আবেদনে বলা হয়, হাটহাজারী মাদ্রাসার মাওলানা আহমেদ শফির আহ্বানে বুধবার (২১ মার্চ) অনুষ্ঠিত বৈঠকে ৮ সদস্যের শূরা কমিটি গঠন করে তাদেরকে লাভলেন মারকাযের মজলিসে শূরার বর্তমান সদস্যবৃন্দের সাথে সংযুক্ত করতে বলা হয়। এ বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী জানান, কেন্দ্রিয়ভাবে কিছুটা ভুলবুঝাবুঝি থাকার কারণে সকলের শ্রদ্ধেয় আল্লামা সফি হুজুর মাদানি মসজিদ মারকাজ কেন্দ্রিক একটি শুরা কমিটি করে দেন। একইসাথে সকলকে মিলেমিশে দাওয়াতি কাজ করার আহ্বান জানান। এতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকায় পুলিশ কমিশনারের কাছে একটি আবেদন করেছিলেন আমাদেরই ভাই আবুল কালাম আজাদ ও আবদুল হালিম। কিন্তু এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। উনারাও আজকে বয়ানে হাজির ছিলেন। অন্যান্য দিনের চেয়ে গতকাল মানুষের উপস্থিতিও বেশি হয়েছে। এ বিষয়ে সিএমপির উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মোস্তাইন সাংবাদিকদের বলেন, তাবলিগের দুইপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও মুখোমুখি অবস্থানের আশংকার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করেছি। পুলিশের অবস্থানের কারণে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ওসি জানান, মাদানি মসজিদে বর্তমান শূরা কমিটির বিপরীতে হাটহাজারী মাদ্রাসার মাওলানা শফি সাহেবের নির্দেশনায় আরেকটি শূরা কমিটি গঠন করা হয়। এতে শান্তিভঙ্গের আশঙ্কায় বর্তমান শূরা কমিটির সদস্য আবদুল হালিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এর প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় আছে। মুসল্লিরা জানান পুলিশ মোতায়েন করায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি ।
Discussion about this post