বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের প্রথম মাসে (জুলাই) মোট বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।
গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১০৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
আমদানি ব্যয় অনুযায়ী রপ্তানি না বাড়ার কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাদের মতে, দেশে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ চলছে। এসব বড় বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি বেড়ে গেছে। এ ছাড়া শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনীয় যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি বেড়েছে। এসব কারণেই বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে।
তবে এই ঘাটতি মেটানো হয় রেমিট্যান্স ও বিদেশি বিনিয়োগ দিয়ে। এই খাতেও তেমন আশানুরূপ গতি নেই। ফলে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অব পেমেন্ট বা বিওপি) ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম মাসে ইপিজেডসহ রপ্তানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ৩৫২ কোটি ৭০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে ৪৭০ কোটি ডলার। এ হিসাবে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার। যা বর্তমান বিনিময় হার (৮৪ টাকা) অনুযায়ী ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি।
আলোচ্য সময়ে সেবা খাতে বেতন-ভাতা বাবদ বিদেশিদের পরিশোধ করা হয়েছে ৮০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে মাত্র ৫৫ কোটি ডলার। এ হিসাবে সেবা খাতে বাণিজ্যে দেশে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার। যা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল (ঘাটতি) ৪১ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
একই সময়ে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ২৪ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ১১ শতাংশ বেশি।
এদিকে এফডিআই বাড়লেও দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ ব্যাপক হারে কমেছে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে শেয়ারবাজারে ১ কোটি ৭০ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। যা তার আগের অর্থবছরে ছিল ৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
