জনতার কলাম ,মোঃ ফয়সাল এলাহীঃ অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটে বঙ্গবন্ধুর গাড়ি চালকের পরিবারের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ চান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গাড়িচালক নাজিম উদ্দিনের পরিবার। অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল পরিবারটি নাজিম উদ্দিনকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিও দাবি করেছেন। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ক্রাইম রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্রাব) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরেন নাজিম উদ্দিনের ছেলে মো. নুরুল আলম সিদ্দিকী। এসময় উপস্থিত ছিলেন পুত্রবধূ জাকিয়া সুলতানা, নাতনী শাহি মনি, শান্তা মনি ও নাতি জিহান। নাজিম উদ্দিনের ছেলে মো. নুরুল আলম সিদ্দিকী সংবাদ সম্মেলনে জানান, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তার গাড়িচালক নাজিম উদ্দিনের কেউ খোঁজ-খবর নেয়নি। দীর্ঘদিন যাবত নানাভাবে চেষ্টা করেও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের সুযোগ পায়নি তারা। বর্তমান রাষ্ট্রপতি যখন আব্দুল হামিদ স্পিকার ছিলেন তখন তার মাধ্যমে ডিও লেটার নিয়ে গিয়েও সাক্ষাতে ব্যর্থ হয় তার পরিবারের সদস্যরা। পটুয়াখালী-২ আসনের এমপি আ স ম ফিরোজের মাধ্যমেও সাক্ষাতের চেষ্টা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের আশায় নাখালপাড়ায় বাসা ভাড়া নেন তারা। কিন্তু তাতেও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ সাক্ষাতের আশায় প্রধানমন্ত্রী দফতর ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীর বরাবর আবেদনও করা হয়। কোনো সাড়া না পেয়ে গণমাধ্যমের শরণাপন্ন হয়েছি। নুরুল আলম সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধু যখনই গাড়িতে উঠতেন তখনই তিনি জিজ্ঞাসা করতেন, ‘নাজিম উদ্দিন তুমি কেমন আছো? তোমার পরিবার বউ-বাচ্চা ভাল তো? আজ বঙ্গবন্ধু নেই। আমাদের পরিবারের খোঁজ-খবর নেয়ারও কি কেউ নেই? তিনি বলেন, আমার বাবা নাজিম উদ্দিন শুধু গাড়িচালক ছিলেন না, তিনি বঙ্গবন্ধুর ওয়্যারলেস অপারেটরও ছিলেন। ৪৭ বছর পরেও স্বীকৃতির জন্য ঘুরতে হচ্ছে। নাজিম উদ্দিনের ছেলে বলেন, আমরা আশাহত নই। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে আমরা দেখা করতে চাই। তিনি আমাদের দুঃখকষ্টের কথা শুনবেন বলে বিশ্বাস করি। তিনি বলেন, আমার মেয়ে বক্সিং, কারাতে ব্ল্যাক বেল্টপ্রাপ্ত। ইতোমধ্যে এশিয়ান অ্যাম্বাসেডর গার্লস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তাইওয়ান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ঘুরে এসেছে। ওর পড়াশুনার খরচও আমি চালাতে পারছি না। ডাবল কামেল ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাশ করা নুরুল আলম বলেন, আমি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার চরকাওনা মধ্যপাড়া আলিম মাদরাসায় বিনা বেতনে প্রভাষক পদে কর্মরত। সব মিলে অর্থাভাবে চার সন্তান নিয়ে বিপাকে রয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত পেলে এর সমাধানের আশা নুরুল আলমের।
Discussion about this post