রউফুল আলমঃনীলফামারী সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের শ্রীনাথ গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক মোঃ জুয়েল ইসলাম। ছোট্টবেলায় বাবাকে হারিয়ে এতিম হয়ে যায়,অনেক কষ্টে দিনমজুর মা বড় করেছেন। চার ভাইবোনের মধ্যে জুয়েল বড়, অভাবের জন্য লেখাপড়া শিখতে পারেনি, নিজের প্রচেষ্টায় টেকনিক্যাল অনেক কাজ শিখে সংসার চালানোতে ব্যস্ত ছিল তার জীবন। সংসারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। বিশমুড়ী এলাকায় কাজ করতে গিয়ে সামান্য ঘটনায় ঐ অঞ্চলের প্রভাবশালী হিংস্র ব্যক্তি মহির উদ্দিন তার দুই ছেলে ইদ্রিস আলী ও নুরুজ্জামান সহ চার জন মিলে এতিম জুয়েল -কে দিনদুপরে প্রকাশ্য জনসম্মুখে নির্মম ভাবে পিটিয়ে যখম করে মুমূর্ষু অবস্থায় রাস্তায় ফেলে যান৷ এলাকার কিছু লোক তাকে প্রথমে নীলফামারী সদর হাসপাতালে পড়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে গত শনিবার(২৩জুন) সকালে মৃত্যু বরণ করেন। ঘটনা পরবর্তী সদর থানা দু’জন আসামী কালা মহির ও ইদ্রিস আলীকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। উল্লেখ্য: কালা মহির একজন দাদন, মাদক ও সুদের ব্যবসায়ী। ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার লক্ষে এতিমের পাশে দ্বারায় একটি ব্যতিক্রমী এতিমখানা “প্যারেন্ট হাউজ“। এতিম হত্যাকারীর ফাসির দাবী নিয়ে জেলা সদরের বিভিন্ন যায়গায় মানববন্ধন করেছে। এতিম নেতারা বলেন, এই সমাজে এতিমেরা এমনিতেই অসহায় উপরন্তু প্রকাশ্য জনসম্মুখে এতিমদের এভাবে মেরে ফেলার সংস্কৃতির চালু হলে পৃথিবীতে বেঁচে থাকা এতিমের জন্য চরম কষ্টকর হবে। প্যারেন্ট হাউজ এর ইলেকট্রিক মেম্বার জনাব সোহেল তাজ বলেন, জুয়েল আমাদের এতিম ভাই, ভাই এর হত্যার ফাসি আমাদের এতিম সম্প্রদায়ের প্রাণের দাবী। “প্যারেন্ট হাউজ” এর প্রতিষ্ঠাতা জনাব মোঃ মশিউর রহমান মাজু (ব্যাংকার) বলেন, “পারিবারিক ও সামাজিকভাবে এতিমেরা চরমভাবে নির্যাতীত ও নিপীড়িত ; যার একটি বড় নজির এই হত্যাকাণ্ড। পারিবারিক ও সামাজিকভাবে এতিম সুরক্ষায় আইন না থাকায় সমাজে এতিমেরা আজ অবহেলিত। এতিম হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের সাপেক্ষে হত্যাকারীকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি যেমনটি দরকার তেমনি এরকম অমানবিক নিষ্ঠুর অন্যায়ের স্বীকার এতিমদের যাতে না হতে হয় সেজন্য এতিম সুরক্ষায় আইন প্রণয়ন এখন সময়ের দাবী”। মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করেন “এতিম সম্প্রদায়, এতিম গবেষণা কেন্দ্র ও প্যারেন্ট হাউজ এর বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য ও নেতৃবৃন্দ সাধারণ জনতা। মানববন্ধনটি সকাল ১০ টায় নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে শুরু হয়ে শহরের চৌরঙ্গী মোড় হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কিছুক্ষণ অবস্থান করে জেলা জর্জকোর্ট এর সামন হয়ে পৌর মার্কেটে অবস্থান করে। এরপর শাখামাছা বাজারে অবস্থান করে, সেখান থেকে কলেজ স্টেশনে এসে সমাজের বিভিন্ন স্তরের জনগণের সম্মিলনে এই এতিম হত্যাকাণ্ডের আসামি মহির উদ্দিনের ফাসির দাবী জোরালো হয়ে ওঠে।
Discussion about this post