গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনাই না করা আর তিস্তা চুক্তি নিয়ে কিছুই করতে না পারা বিএনপির এই বিষয়ে কথা বলা মানায় না বলে মনে করেন হাছান মাহমুদ।
১৯৯১ সালের পর বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে খালেদা জিয়ার দিল্লি সফরে গঙ্গার পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনায় করতে ‘ভুলে’ যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে এ কথা বলেন ক্ষমতহাসীন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।
দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা। বলেন, ‘যাদের নেত্রী দিল্লীতে গিয়ে গঙ্গার পানির কথা ভুলে যায়, তাদের নেতাদের তিস্তার পানি নিয়ে কথা বলার অধিকার নাই।’
প্রধানমন্ত্রীর পশ্চিমবঙ্গ সফরের আলোচ্যসূচিতে তিস্তা চুক্তির বিষয়টি না থাকার সমালোচনা এসেছেন বিএনপির পক্ষ থেকে।
আর এর জবাবে হাছান তুলেন খালেদা জিয়ার সেই ‘ভুলে’ যাওয়ার প্রসঙ্গ। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে মাঝামাঝি সময়ে ভারত গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তবে নয়া দিল্লিতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সে সময়ের আলোচিত গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়টি উঠেনি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, তিনি ভুলে গিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দিনের সফরে এখন পশ্চিমবঙ্গে। শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধন এবং নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দিয়ে সম্মান সূচক ডি লিট ডিগ্রি নিয়েছেন শেখ হাসিনা।
প্রথানমন্ত্রীর সফরের উদ্দেশ্য তিস্তা চুক্তি নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তবু এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা বেশি।
সফরের প্রথম দিন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনা এক ঘণ্টার একান্ত বৈঠক করেছেন। এ বিষয়ে দুই দেশের সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে তিস্তা নিয়ে শেখ হাসিনা কথা বলেছেন, নিশ্চিত করে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরলেই এ বিষয়ে অগ্রগতি জানানো হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে বিএনপির নেতারা চেচামেচি করে বলেন, তিস্তার কী হবে? বাংলাদেশের মধ্যে ছোট-বড় ৫৭টি যৌথ নদী আছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঙ্গার পানির ন্যায হিসাব আমরা আদায় করেছিলাম।’
‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেভাবে সীমান্ত সমস্যা, সমুদ্র সমস্যা সমাধান হয়েছে, ঠিক একই ভাবে যথা সময়ে তিস্তার সমাধান হবে।’
খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের বিষয়ে ইঙ্গিত করে মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাব দেন হাছান।
‘উনাদের পরিবারের অনেকে তো বিদেশে অকালে মারা গেছেন। যে দলের নেতার ছেলে মাদকাসক্তির কারণে বিদেশে মৃত্যুবরণ করে, যাদের নেতারা টেলিভিশনে স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারে না, তারা মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে একটু প্রশ্ন তুলবে এটাই স্বাভাবিক।’
‘মানুষ আজকে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে অনেক খুশি। মানুষ শেখ হাসিনাকে সাধুবাদ দিচ্ছে।’
‘মাদকবিরোধী অভিযানে কে সাদা, কে কালো তা দেখা হচ্ছে না এবং দেখা হবে না। কে কোন দলের, কে কোন মতের, কে কোন পথের তা দেখা হবে না। যারাই এর সাথে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে।’
আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।