রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই স্কুল শিক্ষার্থী ও হানিফ পরিবহনের বাসের স্টাফদের হাতে শিক্ষার্থী পায়েল নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি পেতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকদের নেতা নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান।
রবিবার সচিবালয়ে মংলা বন্দরের জন্য মোবাইল হারবার ক্রেন ক্রয়-সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ কথা বলেন মন্ত্রী। এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয় বলে মন্ত্রী প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে অনেক কথাই বলেন তিনি।
সকালে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসের চাপায় রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। এই ঘটনায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে আছেন আরও ছয়জন শিক্ষার্থী, যাদের দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
‘আপনার (নৌমন্ত্রী) প্রশ্রয়ে দিন দিন চালকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন’ এমন প্রশ্ন শুনে অসন্তোষ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এ প্রোগ্রামের সঙ্গে কি এটা রিলেটেড? আমি শুধু এইটুকু বলতে চাই, যে যতটুকু অপরাধ করবে, সে সেভাবেই শাস্তি পাবে।’
কিছুদিন আগে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসার পথে হানিফ এন্টারপ্রাইজের বাসের যাত্রী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েলের মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় হচ্ছে।
গত ২১ জুলাই রাতে হানিফ পরিবহনের (নং ৯৬৮৭) বাসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসছিলেন পায়েল। ভোররাতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া এলাকা থেকে তিনি নিখোঁজ হন। দুই দিন পর সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গজারিয়া উপজেলার ভাটেরচর সেতুর নিচে খালে তার লাশ পাওয়া যায়।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাসের অটো দরজার সাথে ধাক্কা লেগে পায়েল পড়ে যান। এতে তার নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকলে মারা গেছেন ভেবে তাকে পাশের ভাটেরচর সেতু থেকে নিচের খালে ফেলে দিয়ে গাড়ি চালিয়ে ঢাকায় চলে আসেন চালক ও তার সহকারীরা।
পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষ নেতা হিসেবে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে শাজাহান খান বলেন, ‘শুধু এইটুকু বলি, যে অপরাধ করবে, তাকে শাস্তি পেতে হবে।’
ভারতের মহারাষ্ট্রে শনিবারের দুর্ঘটনার প্রসঙ্গও টানেন মন্ত্রী। বলেন, ‘আপনারা লক্ষ্য করেছেন ভারতের মহারাষ্ট্রে গাড়ি দুর্ঘটনায় ৩৩ জন মারা গেছেন। এখন সেখানে কি…আমরা যেভাবে এগুলোকে নিয়ে কথা বলি? এগুলো কি ওখানে বলে? আমি মনে করি এ বিষয়ে যদি আপনারা আলোচনা করতে চান, এটা নিয়ে পরে আলোচনা হবে।
এ সময় এক সাংবাদিক বলেন, মহারাষ্ট্রে এক দুর্ঘটনায় ৩৩ জন মারা যাওয়া, আর রেগুলার দুর্ঘটনা ঘটা….’। তখন নৌমন্ত্রী তাকে শেষ করতে না দিয়ে বলেন, ‘আপনি কী জানেন ভারতে প্রতি ঘণ্টায় কত লোক দুর্ঘটনায় মারা যায়? ১৬ জন। আপনারাই রিপোর্ট করেছেন।’
চুক্তি স্বাক্ষর শেষে সাংবাদিকরা দুর্ঘটনার বিষয় নিয়ে আরও কথা বলতে চাইলে, মন্ত্রী কথা না বলেই চলে যান।
Discussion about this post