আশানুরূপ রেনু পোনা না পাওয়ায় চাষীরা হতাশাগ্রস্থ।
এস এম মনিরুজ্জামানঃবাগেরহাট জেলায় গলদার রেনু পোনা না পাওয়ায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাজার হাজার ঘের/প্রজেক্ট ফাকা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।নদীর গলদা রেনু পোনার বৈধতা না থাকায় নদী এলাকার রেনু ব্যাবসায়ীরা রেনু পোনা আনছে না যেমন,তেমনি দেশে বিভিন্ন গলদার রেনু পোনার হ্যাচারী থাকলেও পারছেনা উৎপাদন করতে, পারছেনা চাহিদার সিকি ভাগও মেটাতে।শুধুমাত্র নামেই আছে গলদা রেনু হ্যাচারী।
ফকিরহাট সহ বৃহত্তর দক্ষিণ অঞ্চলের তিনের দুই অংশ মানুষ মৎস্য চাষী ।এখানে গলদা,বাগদা,সাদা মাছের চাষ হয়।এর মধ্যে গলদা চিংড়ির চাষই প্রধান।এখানকার অনেক মানুষেরই মৎস চাষের আয়ের উপর নির্ভরশীল ।যে মৎস্য বাংলাদেশ এক সময় বিদেশে রপ্তানী করে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করতো।তখন এই গলদা চিংড়ি সাদা সোনা নামে আখ্যায়িতও হয়েছিল।
বৃহত্তর দক্ষিণ অঞ্চলে প্রায় ৬০ ভাগ মানুষ মৎস্য চাষ করে।এর মধ্যে প্রায় ৫০ ভাগ মানুষে গলদা চিংড়ির চাষ করে। এবংপ্রায় ৭০ ভাগ মানুষ এই মৎস্য চাষের আয়ের উপর নির্ভরশীল।
বৃহত্তর দক্ষিন অঞ্চলের তিনের দুই অংশ মৎস্য চাষ হয় বাগেরহাট জেলায়।
বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট, মোল্লাহাট, চিতলমারী, উল্লেখ যোগ্য গলদা চিংড়ির চাষ হয়।
এখানকার মানুষ ৮০ ভাগ বললেও চলে মৎস্য চাষী।এখানকার পানি মিষ্টি হওয়াই প্রায় ৭০ ভাগ ঘের/প্রজেক্টে গলদা চিংড়ির চাষ হয়।
এক সময় দেশের সর্ববৃহৎ গলদা চিংড়ি বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট থেকে আমদানি করতে হতো।এখনও দেশ-বিদেশে যত গলদা চিংড়ি মাছ রপ্তানি হয় তার ৮০ ভাগ গলদা চিংড়ি ফকিরহাট থেকে আমদানি করতে হয়।
গত দুই/তিন বছর ধরে সেই সাদা সোনার চিংড়ি মাছের বিক্রি বাজারে যেমন ধস পড়েছে।তেমনী গলদা চিংড়ির রেনু পোনা অবৈধ ঘোষনা করায়,এসব এলাকায় হাজার হাজার একর জমিতে যে ঘের/প্রজেক্ট আছে তা নদীর গলদার রেনু পোনা চাষীরা না পাওয়ায় গলদা চাষে ব্যাপক ক্ষতিতে পরিনত হতে যাচ্ছে।গলদা চিংড়ি চাষীরা হতাশায় ভুগছে। এখাকার মানুষের আগের সেই সুখ শান্তি, আনন্দ হারিয়ে নিরামিস হয়ে হতাসায় ভূগছে।
বাংলাদেশে যতগুলো গলদার হ্যাচারী আছে,সেসব হ্যাচারীতে যে রেনু পোডাকশন হয়,তা ফকিরহাট উপজেলার একটি ইউনিয়নে যে ঘের/প্রজেক্ট আছে, সেসব ঘের/প্রজেক্টে ছাড়ার মত রেনু পোনা হ্যাচারী গুলো উৎপাদন করতে পারে না।ফলে গলদা চাষীরা গভীর দুর্চিন্তায় এবং হতাশায় ভুগছে।
এসব এলাকায় বর্তমানে গলদা চিংড়ি চাষীদের অর্থনৈতিক অবস্তা খারাপ থাকায়,নদীর রেনু পোনার দাম কম থাকায় চাষীরা একটু সস্তি অনুভব করছিল ।
দাম কম হলে হবে কি?
এখানে ও অসান্তি ন্যাচারাল নদীর রেনু পোনা সরকার অবৈদ ঘোষনা করায় দালাল চক্র বেড়ে গেছে।
নদীর থেকে জেলেরা পোনা ধরার পর থেকে চাদা শুরু ঘেরে ছাড়ার আগ পর্যন্ত।
বর্তমানে এমনই পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে যে নদী রেনু পোনা গাড়ি পেলে কোস্ট গার্ড রাস্তা থেকে গাড়ি ধরে মাছের মালিকদের, চালানীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে মাছ নিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে। কোথায় যাচ্ছে, কি করছে, কেউ জানে না। মাছ মালিকরা বলছে যদিও বা তারা নদীতে মাছ উম্মুক্ত করার কথা বলে,সেটা লোক দেখানো হচ্ছে, তবে শুধু পানি ঢেলে দেখানো হচ্ছে। মাছ অন্যত্র তারা বিক্রি করে দেয়।
সরকার ঘোষিত অবৈধ পোনার, অবৈধ চাদার কারনে নদীর রেনু পোনা দক্ষিণ অঞ্চলে আশা বন্দ হয়ে গেছে।
এর ফলে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইন্ডিয়া থেকে আশা পুকুর হ্যাচারী রেনু পোনা এদেশে এনে বিক্রি করায় এবং চাষীরা নদীর পোনা না পাওয়াই ইন্ডিয়ান পোনা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।যা মানসম্মত নয়।
ফলে চাষী আবারও লচ করবে। চাষিরা হয়ে পড়বে ঋণী। কারণ বেশিরভাগ গলদা চিংড়ি চাষীদের বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও থেকে লোন নিয়ে চাষ করে থাকে।
ফকিরহাট, মোল্লাহাট, চিতলমারী সহ দক্ষিণ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের দাবি সরকারের কাছে, হয় আমাদের চাষ করার জন্য পর্যাপ্ত হ্যাচারী পোনা প্রোডাকশন এর ব্যবস্থা করা হোক। অথবা নদীর থেকে রেনু পোনা আমদানীর করার জন্য বিনীত ভাবে অনুমতি দেওয়া হোক।
বিষয় টি বিশেষ ভাবে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করছে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার গলদা চিংড়ি চাষীরা।