নুর আলমঃশিক্ষার্থীদের নামিদামি কলেজ আর উন্নতমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চাপ না দিতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। নগরীর রেডিসন ব্লু বে ভিউ হোটেলে এই সংবর্ধনার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা নামের একটি সংগঠন। নওফেল অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের সন্তানেরা ভালোভাবে মাধ্যমিক পাস করেছে। এখন তাদের অনেক নামিদামি কলেজে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হবে, এমন চাপ দেবেন না। তাদের পড়ালেখার লক্ষ্য, তাদের পেশা যেন তারাই ঠিক করে। অভিভাবক হিসেবে আপনি তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগিতা করুন। আপনাদের অতিরিক্ত চাপের কারণে তাদের মধ্যে যে সৃজনশীল চিন্তাগুলো আছে, সেগুলো লোপ পায়।’ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমরা অনেক ভালো রেজাল্ট করেছ। কিন্তু এই মুহূর্তে নিজেদের কর্মসংস্থান, পেশা, উচ্চশিক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আসেনি। তোমাদের মধ্যে কারও ছবি আঁকার নেশা থাকবে, কারও আবার খেলা ভালো লাগবে- চিন্তাটাকে সেদিকেই ধাবিত করো। পড়ালেখার জটিল চিন্তা বাদ দিয়ে নিজেদের ভেতরে যে একাডেমিক বিষয়ের বাইরে সৃজনশীল বিষয় সেগুলো নিয়ে ভাবো। নিজেরা হাফ ছেড়ে বাঁচো।’ ‘অনেক ভালো রেজাল্টের পর উচ্চশিক্ষা নিয়ে কেউ যদি কৃষিকাজেও জড়িত হয়, দেখা যাবে সেখান থেকেও সফলতা আসবে। তার উৎপাদিত কৃষিপণ্য ব্র্যান্ড হয়ে যেতে পারে, একটা বড় ফার্ম গড়ে উঠতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নেওয়ার পর কেউ যদি মনে করেন, ইলেকট্রিক্যাল, মোবাইল কিংবা অটোমোবাইলের ট্রেড কোর্স করবেন, তাহলে তিনি যেন সেটাই করেন। দেখা যাবে, তিনি সেখানেই উদাহরণ দেওয়ার মতো সফল হয়েছেন।’ ‘কোনো পেশাই ছোট নয়। পৃথিবীতে অনেক জ্ঞানী-মেধাবী মানুষ নিজেদের পেশার বাইরে গিয়ে সফল হয়েছেন। পৃথিবীতে যারা সফল হয়েছেন, তারা গতানুগতিক চিন্তার বাইরে গিয়ে সফল হয়েছেন। শিক্ষা যেন তোমাকে দূরদর্শী করে, তোমার দৃষ্টি যেন সংকীর্ণ না করে। শিক্ষা যেন তোমার কাছে শুধু উন্নত জীবন গড়ার বিষয় না হয়।’ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন নওফেল। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা, চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি মুহাম্মদ সাজ্জাত হোসেনের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন ফটিকছড়ি মহিলা সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক মাহমুদ সালাউদ্দিন চৌধুরী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মরিয়ম লিজা, চট্গ্রাম উম্যান চেম্বারের সদস্য মরিয়ম বেগম মিনা, সারতাজ ইমরান। অনুষ্ঠানে এ বছর এসএসসিতে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে জিপিএ-৫ পাওয়া ৯৯৭ জনকে সংবর্ধিত করা হয়েছে। মুমতাহিনা তাবাসুম মালিহার সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা ফখরুদ্দিন বাবুল, এম আর আজিম, সালা উদ্দিন আহমেদ, আবুল হোসেন আবু, ওয়াসিম উদ্দিন, নুরুল আনোয়ার, এম শাহাদাত নবী খোকা, সুরজিত দত্ত সৈকত, অধ্যাপক রেজাউল করিম, এডভোকেট কামরুল আজম টিপু, মউছুপ উদ্দিন মাসুম, নোবেল দে টিটু, অনিক হাওলাদার, নোমান বিন খুরশীদ, আবু মুহায়মিন চৌধুরী, নাবিল হাসান, রিমন কান্তি ধর, শুভ্র সেন, ওমান শিকদার, তারেক হোসাইন, তানভীর হোছাইন, শাহাজাহান চৌধুরী, রিগেন বড়ুয়া, বিক্রম বড়ুয়া, নাঈম আব্দুল্লাহ, নুরুল আমিন, তৈয়ব শাহ প্রমুখ।ফাইল ফটো