বিশেষ প্রতিনিধিঃপুলিশের জনবল বাড়ানোর ইঙ্গিত দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা পুলিশে লোকবল বৃদ্ধি করেছিলাম। গত ১০ বছরে প্রায় ৮০ হাজার লোকবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। ভৌগলিক অবস্থা এবং মানুষ যেন পুলিশের সেবা পায় সেটা বিবেচনা রেখেই পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজন বোধে পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
পুলিশ সপ্তাহ-২০১৯ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া পুলিশের বর্তমান জনবল প্রায় সোয়া দুই লাখ থেকে আরও অন্তত ৫০ হাজার বাড়ানোর অনুরোধ করেন। তার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের লক্ষ্যে শিল্পাঞ্চলগুলোর নিরাপত্তায় আরও শিল্প পুলিশ দরকার। মেগা প্রকল্পের নিরাপত্তার জন্যও কিন্তু পুলিশের প্রয়োজন। পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
পুলিশের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আলাদা আলাদা ইউনিট গড়ে তুলে তাদের প্রশিক্ষণটাও সেইভাবে হওয়া উচিত যে, কোথায় কোন মানুষের সাথে কীভাবে আচরণ করতে হবে। অশান্ত পরিবেশ এলে কীভাবে সেটা দমন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার নিজের কোনো ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা বা চাওয়া-পাওয়া নেই। আমি শুধু দেশের মানুষের কল্যাণের জন্যই কাজ করে যেতে চাই, যাতে বাংলাদেশকে একটা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। সেক্ষেত্রে সকল পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের বলবো, পুলিশকে হতে হবে জনবান্ধব পুলিশ, যেটা জাতির পিতা নির্দেশ দিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হলে নিজের পরিবারেরই উন্নতি হবে। প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে এই কথাটাই মেনে চলতে হবে এবং সেইভাবেই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যে পরিবেশ দরকার, সেই পরিবেশ তৈরিতে পুলিশ বাহিনীকেই সবচেয়ে বেশি শ্রম দিতে হবে। যে শ্রম গত ১০ বছরে আপনারা দক্ষতার সাথে দিয়েছেন। যার জন্য অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি। তবে আমাদের যাত্রা শেষ হয়নি, আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাই আপনাদের (পুলিশ) সেইভাবে আন্তরিকতার সাথে জনবান্ধব পুলিশ হয়ে কাজ করতে হবে। মানুষের ভেতর আস্থা-বিশ্বাস সৃষ্টি করতে হবে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও আগুন সন্ত্রাসের মতো অনেক ‘চড়াই উৎরাই’ পার করে যেতে হয়েছে। আমাদের পুলিশ বাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সব অবস্থার মোকাবেলা করেছে। জঙ্গিবাদ মোকাবেলাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনারা যে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন সে জন্য আপনাদের সাধুবাদ জানাই, ধন্যবাদ জানাই।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. জাবেদ পাটোয়ারি, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মোকলেসুর রহমান, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) (হাইওয়ে) আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম, ঢাকা তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার এবং রাজবাড়ী পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি বক্তব্য রাখেন।ছবি ফাইল ফটো