সড়কে নৈরাজ্য থামাতে বিআরটিএ’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে আরও ৫জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন চট্টগ্রামের পরিবহন নেতরা। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এ দাবি জানান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা। এতে লিখিত বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্য সচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদের নাম ব্যবহার করে কিছু ব্যক্তি প্রশাসনকে দাবি আদায়ে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে না পেরে তারা অযৌক্তিক ৯দফা দাবির কথা বলে ধর্মঘটের হুমকিও দিয়েছেন। এর সঙ্গে আমরা জড়িত নই। বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদ নামে নাম সর্বস্ব সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে পরিবহন সেক্টরে বিশৃংখলা সৃষ্টি, চাঁদাবাজিসহ গাড়ির পারমিট প্রদানের নামে মালিকদের কাছ থেকে প্রতারনার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তারাই এখন আবার মালিকদের জন্য মায়াকান্না করছে। তিনি বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। পুলিশ, প্রশাসনকে হুমকি দিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করার অধিকার কার ও নেই।
সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করতে পরিবহন ধর্মঘটের হুমকি দিয়ে রাস্তায় নামলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। প্রয়োজনে চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধর্মঘটের হুমকি দাতাদেরকে প্রশাসনের হাতে তুলে দেবে। বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ঐক্য পরিষদের নেতা-কর্মীরা যে ৯দফা দাবি জানিয়েছেন তা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যক্রমকে চ্যালেঞ্জ করার নামান্তর। আদালত অবমাননার শামিল।
যারা এ কাজ করছে, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় থেকে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য ও বিশৃংখলা দূর করে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করতেই কতিপয় নাম সর্বস্ব পরিবহন সংগঠন মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে সর্বত্র গুজব ছড়াচ্ছে। যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই ধর্মঘটের হুমকি দিচ্ছে। ‘মেট্রোপলিটন এলাকাসহ চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলা-উপজেলায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক রাখা হবে। সকল মালিক-শ্রমিক স্ব স্ব গাড়ি নিজেরাই রাস্তায় বের করবে। অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের নামে যদি কেউ রাস্তায় বিশৃংখলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়- চট্টগ্রাম বিভাগের গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা তাদের ধরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করবে।’ বলেন এ পরিবহন নেতা।
সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল নবী লেদু, বৃহত্তর চট্টগ্রাম পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. আবদুল মান্নান, চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ফ্ল্যাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সভাপতি মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল হাশেম প্রমুখ। প্রসঙ্গত, প্রায় ১৮ মাস পর গত বছরের ২৬ আগস্ট বিআরটিএ’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে মনজুরুল হক ও জিয়াউল হক মীরকে পদায়ন করে সরকার। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা।
ফিটনেসবিহীন যানবাহন, লাইসেন্স ছাড়া চালকদের জরিমানাসহ সড়কে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেন তারা। সম্প্রতি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল হক মীর এবং সোহেল রানাকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে পদায়ন দেয় সরকার। এতে ফের ম্যাজিস্ট্রেট সংকটে পড়ে চট্টগ্রাম বিআরটিএ। বর্তমানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনজুরুল হক একাই নগরের বিভিন্ন সড়কে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি