৭১ বাংলাদেশ ডেস্কঃরেলসেবার ১৬৭ বছরের ইতিহাসে ভারতে এবারই প্রথমবারের মতো সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। গত ২৫ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে লকডাউন ঘোষণার পর রেল কর্তৃপক্ষও ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। রেলের ট্রেনগুলোকে এখন করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহারের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
ভারতে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হতেই ট্রেনের ২০ হাজার পুরনো বগিকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যেই তারা দেশজুড়ে ১২৫টি হাসপাতাল পরিচালনা করছে। ফলে মোবাইল বেড বাড়ানোর দক্ষতা তাদের রয়েছে।
আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। গত ২৮ মার্চ টুইটারে দেয়া এক পোস্টে এ নিয়ে কথা বলেছেন ভারতের রেলমন্ত্রী পিযুষ গয়াল। তিনি বলেন, মানুষ যেন স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে চিকিৎসা নিতে পারে সেই ব্যবস্থা করবে রেল কর্তৃপক্ষ। রোগীরা সেখানে পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ পাবে।
ভারতের রেল নেটওয়ার্ক সারা বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম এবং ভারতের সবচেয়ে বড় পরিসরে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয় এখানে। সেখানে সাধারণত দৈনিক ২০ হাজারের বেশি ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেন দেশজুড়ে সাত হাজার ৩৪৯টি স্টেশন প্রদক্ষিণ করে। তবে বিদ্যমান লকডাউনের ফলে প্রায় ৬৭ হাজার ৩৬৮ কিলোমিটার এলাকায় আর ট্রেন চলাচলের সুযোগ থাকছে না।
ফলে কয়েক হাজার যাত্রীবাহী ট্রেন এমনিতেই অলস পড়ে আছে। তবে মালবাহী ট্রেন এখনও পর্যন্ত চালু রয়েছে। এখন ব্যবহৃত হচ্ছে না এমন নন এসি বগিগুলো শনাক্ত করতে রেলওয়ের ১৬টি জোনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মূলত এ বগিগুলোকেই হাসপাতাল বা আইসোলেশন ওয়ার্ডে পরিণত করা হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে এসব হাসপাতাল বা ওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারবে রোগীরা।
রেলওয়ে বোর্ডের তথ্য ও প্রচার বিষয়ক নির্বাহী পরিচালক রাজেশ দত্ত বাজপেয়ী জানিয়েছেন, ১৫ দিনের প্রথম পাঁচ হাজার আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি হবে। প্রয়োজনে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও বেশি সংখ্যক বগিকে হাসপাতালে হাসপাতলে রূপান্তর করা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, ভারতে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত অন্তত ১১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্ত হয়েছেন চার হাজার ৩১৮ জন। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩২৮ জন।ভারতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল জানিয়েছেন, তার দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৪২ শতাংশের বয়স ২১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।