ফয়সাল ঃ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার আধার মানিক দরগাহ নামক স্থানে ইউনিক পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে গেলে অন্ততঃ ৩০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে শিশু ও মহিলাও ছিলেন। আহতদের মধ্যে ২২ মাস বয়সী শিশুকে গুরুতর আহতাবস্থায় চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। গত (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পর রেকার বা ক্রেন দিয়ে খাদ থেকে বাসটি তুলতে গিয়ে মহাসড়কে প্রায় ১ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে মহাসড়কের উভয়পাশে দীর্র্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে যাত্রী ও সাধারণ লোকদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে দেখা গেছে। দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের কেঁওচিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত আধার মানিক দরগাহ নামক স্থানে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামগামী হানিফ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস (ঢাকা মেট্রো–ব–১৪–১৬৯৭) অজ্ঞাতনামা অপর একটি গাড়িকে ওভারটেক করতে যায়। এসময় কক্সবাজারগামী ইউনিক পরিবহনের একটি বাসের (ঢাকা মেট্রো–ব–১৪–৬৪৭৩) সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াতে ইউনিক বাসটি বাম দিকে বাঁক নিলে বাসটি হানিফ পরিবহনের পিছনের অংশে লেগে মহাসড়কের পূর্বপাশে পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে যায়। এসময় ইউনিক বাসের শিশু ও নারীসহ অন্ততঃ ৩০ জন যাত্রী কম–বেশি আহত হন। আহতদের কেরানীহাটের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ২২ মাস বয়সী সাবিহা আক্তার নামে এক শিশুকে গুরুতর আহতাবস্থায় চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আহতরা শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছেন। এছাড়া হানিফ পরিবহনের বাসের পেছনের অংশে আংশিক ক্ষতি হলেও যাত্রীরা সবাই অক্ষত ছিলেন। আহত ইউনিক পরিবহনের যাত্রীদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন : মো. একরাম (২৫), মো. লিটন (২৪), মাহাবুবুর রহমান (৪৫), মো. বাবুল (৪০), রেখা আক্তার (৩৫), হালিমা বেগম (৪০), মো. সাকিব (১২), আরাফাত হোসেন (২০), জয়নাব বেগম (১৯), ফয়সাল হাসান (২৭), সাবিহা আক্তার (২২ মাস), মো. ইসমাইল (৪১), রহিমা আক্তার (৩৩), মো. আলী (৪২), জাহেদা বেগম (৩৫), দিলুয়ারা বেগম (৪৫), জমির উদ্দীন (৩৪), মিনা আক্তার (৩৮), হালিমা বেগম (৩৩), মীম (৬), ফরিদ আলম (৪৫), এনামুল হক (৪২), মো. নাছির উদ্দীন (৩৩), মো. ওয়াহিদ (২৮), জাহেদুল ইসলাম (২৯), মো. সেলিম (৩৩) ও মো. নুরুল ইসলাম (৩৫)। এ ব্যাপারে বাসের যাত্রী মো. কামাল বলেন, আমরা মাছের ব্যবসা করি। চট্টগ্রাম থেকে আমরা ৬ জন মিলে বিভিন্ন প্রকারের মাছ নিয়ে চকরিয়া যাচ্ছিলাম। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাদের বাসটি মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে যায়। এতে আমরাসহ অনেক যাত্রী আহত হয়। তবে কেউ মারা যাওয়ার খবর আমরা পাইনি। সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিসের লিডার মো. আব্দুল্লাহ বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত যাত্রীদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। এ ছাড়া ৩টি রেকারের সহায়তায় খাদে পড়ে যাওয়া বাসটি উদ্ধার করেছি। এতে অন্ততঃ ৩০ জনের মত বাসের যাত্রী আহত হয়। তবে কেউ মারা যায়নি। রেকার দিয়ে বাসটি তোলার সময় মহাসড়কে প্রায় ১ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। দোহাজারী হাইওয়ে পুলিশের ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, মূলত দু’টি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হতে যাচ্ছে, এ সময় ইউনিক পরিবহনের বাসটি বাম দিকে বাক নিলে চালক নিয়ন্ত্রন হারালে বাসটি মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে যায়। এ ঘটনায় বাস দু’টি আটক করা হয়েছে।
Discussion about this post