মোঃ ফয়সাল এলাহী ঃ গোসাইলডাঙ্গা ও ৩ নাং ফকির হাট লাল মাঝির বাড়ির স্তানিয় বাসিন্দারা জানান হাজী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন এটাই অত্যন্ত আনন্দের বিষয় । দিনভর উত্তেজনা তবুও কঠোর নিরাপত্তায় ভোট যুদ্ধে জাহাঙ্গীর আলম জয়ী। মাত্র ৯ ভোটের ব্যবধানে নগরির গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে বেসরকারী ভাবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছে জাতীয় শ্রমিক লীগ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি হাজী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি ঘুড়ি প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ২৮৬৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি ছিলো ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোর্শেদ আলী। তিনি লাটিম প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ২৮৫৫ ভোট। মাত্র ৯ ভোটের ব্যবধানে ৪র্থ বারের মতন কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেন হাজী জাহাঙ্গীর আলম। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৪ কাউন্সিলর পদ প্রার্থীর ভোট কাড়াকাড়ির মাঝে ৩য় স্থানটি দখল করে নেয় ইকবাল শরীফ। তিনি ঠেলাগাড়ী প্রতিক নিয়ে পেয়েছেন ২৫৭২ ভোট। এছাড়া ৪র্থ স্থানে আছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা বিবি মরিয়ম। প্রথমবার সরাসরি সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নেয়া এই নারী প্রচার প্রচারণা বেশ সাড়া ফেললেও তিনি দিন শেষে টিফিন ক্যারিয়ার মার্কা নিয়ে পেয়েছেন ২০৫৮ ভোট। এরপর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ নুর নবী লিটন রেডিও প্রতিকে পেয়েছেন ৯২৩ ভোট। আর জাতীয় পার্টি থেকে মোঃ শাকেরের ব্যাডমিন্টন র্যাকেট প্রতিকে পড়েছে ৩৩ ভোট। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ওয়ার্ডের প্রতিটি কেন্দ্রে ৭৩টি বুথে এই ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। ভোট কেন্দ্রের ভেতর আইন শৃংখলা বাহিনীর নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে কোন প্রার্থীই অবৈধ প্রভাব বিস্তার করতে না পারলেও কেন্দ্রের বাহিরে একাধিকবার সংঘর্ষের জড়িয়েছে কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকেরা। নগরির বন্দর এলাকার গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনকে ঘিরে সৃষ্টি হয় চাপা উত্তেজনা। শান্তি পূর্ণ ভোট গ্রহণ নিয়ে দেখা দেয় নানান শংকা। কিন্তু সকালে ভোট গ্রহনের সময় থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রেকে আইনশৃংখলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে ঢেকে ফেলেন। বৈধ ভোটার ছাড়া কাউকে কেন্দ্রের সীমানায় পর্যন্ত প্রবেশ করতে দেয়নি আইন শৃংখলা বাহিনী । জাল ভোট দিতে কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্ঠাকালেই মেজিস্ট্রেডের হাতে আটক হয় ১৩ জন। এরপর থেকেই পালটে যেতে থাকে ভোট কেন্দ্রের চিত্র। ভূয়া বা জাল ভোট দিতে গেলেও আটক হচ্ছে দেখে অবৈধ সুযোগের আশায় আর কেউ কেন্দ্র মুখি হয়নি। ফলে নির্বাচনের জয় পরাজয়ের নেয়ামক হয়ে ওঠে প্রকৃত ভোটারেরা। তবে কেন্দ্রের বাহিরের কিংবা অদূরের দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। প্রথমে নীমতলা কেন্দ্রের অদূরে ব্যাপক বোমা বিষ্ফোরনের ঘটনা ঘটে। তবে দ্বায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃংখলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে সন্ত্রাসীরা কেন্দ্রের সীমানা অব্দি পৌছতে পারেনি। এরপর সবচেয়ে বড় রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে ভোট কেন্দ্রের অদূরে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর প্রধান কার্যালয় ও বাসভবন এলাকায়।পশ্চিম গোসাইলডাঙ্গা বেচা শাহ মাজার এলাকায় দুইপক্ষের সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য সহ ১০ থেকে ১২ জনের অধিক ব্যাক্তি আহত হয়। জানাগেছে মূলত জাহাঙ্গীর আলম ও বিবি মরিয়মের সমর্থকদের মাঝে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে । আহতদের মধ্যে ছররা গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহতের সংখ্যাই বেশী। তবে বেশীর ভাগ আহতকে মুখ লুকিয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে দেখা যায়।এই ঘটনায় উভয় আওয়ামী লীগ প্রার্থীই একে অন্যের বিরুদ্ধে বহিরাগতদের দিয়ে নির্বাচনের বিশৃংখলার অভিযোগ তুলেন। তবে এই নির্বাচনে সার্বিক ভাবে কেন্দ্র ও এর আশপাশে পুলিশ, আনসারের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন ছিলো বিজিবি ও র্যাব। এছাড়া সাদা পোষাকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারাও ছিলেন বেশ তৎপর। আটককৃতদের বিষয়ে রাতে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মইনুল ইসলাম জানান, “দ্বায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেডের নির্দেশে কেন্দ্রে প্রবেশের অভিযোগে ১৩জনকে থানায় আটক করে নিয়ে আসা হয়েছিলো। পরে ম্যাজিস্ট্রেডের নির্দেশে লিখিত মুচলেকায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। ভোট কেন্দ্রের বাহিরে সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন পক্ষের কাছ থেকে থানায় অভিযোগ জানানো হয়নি বলেও জানান তিনি।