নিজস্ব প্রতিবেদক:কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলাধীন সদর ইউনিয়নের শীলবুনিয়া পাড়ার শীর্ষ মাদক কারবারি দেলোয়ার হোসেন ওরফে ইয়াবা দেলোয়ার একটি আতংর্কের নাম হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে সর্বত্রে।
শীলবনিয়া পাড়া এলাকার মোঃ জোবাইর হোসেনের বড় ছেলে এই মাদক সম্রাট দেলোয়ার। ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে আলাদিনের চেরাগ ছোঁয়া পেয়েছে এই শীর্ষ মাদক কারবারি। বিগত ৫-৬ বৎসর আগেও যার নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা, সে ব্যাক্তি বর্তমানে কোটি কোটি নগদ টাকা, জায়গা-জমি, গাড়ি এবং দোকানপাটের মালিক বনে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশের শীর্ষ মাদক কারবারি সম্প্রতি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়া ইয়াবা সম্রাট সাইফুল করিমের সাথে দেলোয়ারের ঘনিষ্টতা ছিল বলে গুরুতর অভিযোগ ওঠেছে। সাইফুল করিমের পক্ষ হয়ে সারা দেশে সাব-এজেন্টের ভুমিকায় দেলোয়ার ইয়াবা পাচার করতো। ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দেশের শীর্ষ মাদক কারবারি সাইফুল করিম নিহত হওয়ার পর পরেই মাদক ব্যবসার পুরোপুরি এজেন্ট হিসেবে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন (২৮)।
এলাকাসূত্রে জানা যায়, সাইফুল করিম ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার পর অভিযুক্ত ইয়াবা দেলোয়ার নিজেকে সাইফুল করিম হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত, ক্ষমতাধর, দাপটবান ব্যাক্তি হিসেবে পরিচিতি করতে মরিয়া। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্দান্ত পরিশ্রম ও বিচক্ষণতার আলোকে সাইফুল করিম ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের ঘটনার তদন্তে বেরিয়ে আসে শীর্ষ মাদক কারবারি ইয়াবা দেলোয়ারের নাম।
অভিযুক্ত এই ব্যক্তি ঠিক তখন থেকেই আইন-শৃংখলা বাহিনীর হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আত্মগোপনে সময় পার করছে। ইয়াবার টাকায় রাম-রাজস্ত কায়েম করতে দেলোয়ারকে একসময় দেখা যেত সরকার দলীয় সংগঠনের ছত্র ছায়ায় রাজনীতি করতে। এবং সদর যুবলীগের ব্যানারও অনেক সময় দেখা যেত। নিজেকে আড়াল রাখতে দলীয় সংগঠনের মিটিং মিছিলে অংশগ্রহণ করে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। এতো সমালোচনার মধ্যেও অভিযুক্ত ইয়াবা সম্রাট দেলোয়ার অবৈধ মাদক কারবারের কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার বেপরোয়া জীবন-যাপন করতে মোটেও দ্বিধাবোধ করে না।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ অক্টোবর ১৯ইং শনিবার বিকালের সময় দেলোয়ার নিজের আপন বউ এবং ছোট ছোট দুটো বাচ্চাকে (আনিকা এবং আয়ন) ঘরে রেখে আপন শালি (আপন বউয়ের ছোটবোন) জোসনা আক্তার ময়না (১৩)কে প্রেমের ফান্দে ফেলে নিয়ে যায় কাল্পনিক রাজ্যে। জোসনা আক্তার ময়না (১৩) জেএসসি পরীক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
এঘটনায় ময়নায় পিতা মোঃ রশিদ (দেলোয়ারের শ্বশুর) থানায় শিশু অপহরণ ও অন্যান্য অভিযোগ তুললে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ দেলোয়ারের ঘরে তদন্তে যায়। তখন বাড়িটি তালাবদ্ধ এবং সদস্যশূণ্য দেখা যায়। তবে দেলোয়ারের স্ত্রী বিবি হাফসা এবং এলাকাবাসীর স্বীকারোক্তিতে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয় তদন্তে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা।
দেলোয়ারের এই ধরনের জঘন্য কর্মকাণ্ডের কারণে দুই পরিবারের মধ্যে বিরাজ করছে এক অসহনীয় দুঃখ ভারাক্রান্ত পরিবেশ। একদিকে নিরক্ষর দেলোয়ার সুশিক্ষার অভাব অন্যদিকে প্রচুর টাকা-পয়সা ও ধন-সম্পদের মালিক বনে যাওয়ায় দিন দিন বেপরোয়া কর্মকান্ডে জীবন যাপন করে আসছে এই ইয়াবা সম্রাট। এলাকাবাসী এবং সচেতন মহলের দাবি, শীর্ষ ইয়াবা সম্রাট দেলোয়ারকে যদি আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির বিধান কার্যকর করে তাহলে অত্র এলাকার আগামী নতুন প্রজন্ম সুন্দরভাবে জীবন যাপন করতে পারবে এবং অবৈধ মাদক কারবারকে বয়কট করতে শিখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
এদিকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে এসআই সুজিদ দাস বলেন, দুজনের মধ্যে হয়তো প্রেম-ভালবাসা ছিল। তদন্তে গেলে অভিযুক্ত দেলোয়ারের বাড়ি সদস্যশূণ্য এবং তালাবদ্ধ দেখা যায়। তবে তাকে দ্রুতভাবে আটকের প্রক্রিয়া চলছে।