ভুল চিকিৎসা ও চিকিৎসকের অবহেলায় আড়াই বছরের শিশু রাইফা খানের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা না নিলে আমরণ অনশনে যাবেন সাংবাদিক রুবেল খান। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কার্যালয়ের সামনে এ অনশন করবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) বিকেলে বিষয়টি জানিয়েছেন রাইফার বাবা রুবেল খান।
তিনি বলেন, ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারণে আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে বুধবার থানায় এজাহার দিয়েছি। একদিন পার হয়ে গেলেও এখনো এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি পুলিশ।
রুবেল খান অভিযোগ করে বলেন, মামলা না নিয়ে পুলিশ গড়িমসি করছে।
বু্ধবার (১৮ জু্লাই) বিকেলে ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী ও তিন চিকিৎসককে অভিযুক্ত করে চকবাজার থানায় এজাহার দায়ের করেন শিশু কন্যা রাইফার বাবা সাংবাদিক রুবেল খান।
এজাহারে অভিযুক্ত চারজন হলেন- ডা. বিধান রায় চৌধুরী (৫০), ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত (৩২), ডা. শুভ্র দেব (৩২) ও ম্যাক্স হাসাপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী (৫৭)।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) মো. আবুল কালাম বলেন, এজাহারটি যাচাই করছি। যাচাই শেষে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে।
এজাহার পাওয়ার একদিন পরেও মামলা রেকর্ড না হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে ওসি আবুল কালাম বলেন, রাইফার মৃত্যুর পর সিভিল সার্জন মহোদয়ের সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আমরা হাতে পাইনি। সে রিপোর্ট পেলে মামলা মামলা রেকর্ড করা হবে।
এর আগে ২৯ জুন রাতে নগরের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন সাংবাদিক রুবেল খানের মেয়ে রাইফা খান। মৃত্যুর পর থেকেই রাইফার পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা এবং দায়িত্বরত চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারণেই অকাল মৃত্যু ঘটে রাইফার।
ওই দিন রাতেই এ জন্য দায়ী ডাক্তার এবং নার্সদের আটক করে চকবাজার থানা পুলিশ। কিন্তু ভোর রাতে তাদের ছাড়িয়ে আনতে থানায় গিয়ে অশোভন আচরণ এবং চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা বন্ধের হুমকি দেন বিএমএ নেতা ফয়সল ইকবাল চৌধুরী ও তার সহযোগিরা।
এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের আন্দোলনের মুখে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকীকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ০৬ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলায় রাইফার মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করে তদন্ত কমিটি।
অন্যদিকে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি ম্যাক্স হাসপাতালের লাইসেন্সে ত্রুটিসহ ১১টি অসঙ্গতি রয়েছে বলে জানায়।
Discussion about this post