৭১ বাংলাদেশ প্রতিনিধিঃসম্প্রতি ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন নিয়ে তীব্র বিরোধিতা করছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, আমরা সবাই নাগরিক। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য আমাদের আদর্শ। আমরা কাউকে বাংলা ছাড়তে দেব না। আমরা এনআরসি ও সিএএ-কে বাংলায় ঢুকতে দেব না। আমাদের শান্তি বজায় রাখতে হবে। সঙ্গে ছিল বিশাল মিছিল।
মিছিল শেষ জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সামনে ভাষণ দেন তৃণমূল চেয়ারপার্সন তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিএএ এবং এনআরসি যে পশ্চিমবঙ্গে কার্যকরী হতে দেবেন না, সে কথা আগে থেকেই নানা মাধ্যমে বলছিলেন মমতা। এ দিনের ভাষণে আরও জোর দিয়ে তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে সিএএ বা এনআরসি কিছুতেই কার্যকরী করতে দেবেন না।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলায় আছি। এখানে এনআরসি করতে হলে, আমার মৃতদেহের উপর দিয়ে করতে হবে, এখানে সিএবি করতে হলে আমার মৃতদেহের উপর দিয়ে করতে হবে, এই ভাষাতেই এ দিন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে সুর চড়ান মমতা।
মমতা বলেন, ‘কোনও কোনও বিজেপি নেতা বলতে শুরু করেছেন, বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন কেন জারি হবে না? আমাদের সরকার ফেলে দেবেন? ফেলে দিন। কিন্তু ইজ্জতের জন্য যখন লড়তে নেমেছি, তখন মাথা নত করব না।’
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের নাম এ দিন করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর ইঙ্গিত বেশ স্পষ্ট ছিল। তিনি বলেন, ‘এখানে আর একজন বড় বিজেপি নেতা এসেছেন। বলছেন সাবধান করে দিচ্ছি, কেন অশান্তি হচ্ছে? আমি বলেছি, আগে অসামকে গিয়ে বলুন। সেখানে বিজেপির সরকার রয়েছে, তাদের বলুন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে সব সময়ই রাজ্যের বিষয় এবং সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের কোনও চেষ্টা যে তিনি পছন্দ করেন না, তা আগেও অনেক বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছেন। গত চার দিনে রাজ্য জুড়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতেও যে তিনি সেই অবস্থানেই অনড় রয়েছেন, মমতা এ দিন তা-ও বুঝিয়ে দেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে জিজ্ঞাসা করছে, সিআইএসএফ লাগবে? বিএসএফ লাগবে? আমি বলেছি, কিচ্ছু লাগবে না। আমাদের পুলিশই যথেষ্ট।’ পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ এবং পুলিশ পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে পরিস্থিতি সামলে নেবেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই এই বার্তাই এ দিন দিতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নাগরিকত্ব আইন নতুন করে তৈরি করার কোনও প্রয়োজন ছিল না এ কথাই এ দিন জোর দিয়ে বলতে চেয়েছেন তৃণমূল চেয়ারপার্সন। জমায়েতের উদ্দেশে এ দিন তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা ভোট দেন না? আপনাদের নাম ভোটার তালিকায় নেই? আপনাদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে পড়ে না? তা হলে আবার কিসের নাগরিকত্ব আপনাকে দেবে?’ভারতে সিএবি সংসদে পাশ হওয়ার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা এবং হাওড়া জুড়ে তিন দিন মহামিছিল করবে তৃণমূল।
কথা মতো গত ১৬ ডিসেম্বর সোমবার রেড রোড থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার পদযাত্রা করেন তিনি। ফাইল ফটো
সুত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা
Discussion about this post