কর্ণফুলী নদীর শাখা শিকলবাহা খালের উপর নির্মিত কালারপোল সেতুটি দূ:খ হয়েই থাকল ৮ ইউনিয়নের লাখো মানুষের কাছে। দুই বছর না ঘুরতেই সেতুর গার্ডার ভেঙ্গে পিলার ধসে বন্ধ হয়ে গেছে সেতুর ওপর যান চলাচল। এতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বিপুলসংখ্যক নারী শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ চরমভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় নদী পার হয়ে তাদের পৌঁছতে হচ্ছে চট্টগ্রাম শহর ও অন্যান্য গন্তব্যে।
শিকলবাহা ইউনিয়ন ও কোলাগাঁও ইউনিয়নের মাঝখানে বয়ে যাওয়া শিকলবাহা খালের উপর পুরনো কালারপোল সেতুটি ২০১৪ সালে ৪ কোটি টাকায় পূন:নির্মানের পর যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। দুই বছর না ঘুরতেই গত জানুয়ারিতে ব্রিজটির পশ্চিমাংশের একটি পিলার ধসে পড়েছে। বর্তমানে খরস্রোতা এই খালের দুই পাড়ের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিনচালিত বোটে এপার থেকে ওপারে যাতায়ত করছে। এতে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও গ্রামবাসী।
জানা যায়, ধসে পড়া ব্রিজটি সংস্কারের জন্য সওজ কর্তৃপক্ষ আবারো ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ চৌধুরী টিপু বলেন, জনগণের ভোগান্তি কমাতে জরুরি ভিত্তিতে সওজ কর্তৃপক্ষ ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ধ্বসে পড়া পিলারটি সংস্কার করে শীঘ্রই ব্রিজটি পুনরায় খুলে দেওয়া হবে। তাছাড়া কংক্রিট বেইজড গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য ৩২ কোটি টাকার একটি প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তা অনুমোদন হয়ে আসলে কংক্রিট বেইজড গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হবে।
শুধু দুই ইউনিয়ন নয়, কালারপোল সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করে পটিয়া ও কর্ণফুলী থানার কোলাগাঁও, ধলঘাট, হাবিলাইশদ্বীপ, কুসুমপুরা, জিরি, শিকলবাহা, চরল্যা ও চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। এ ছাড়া এই নদীর পাড়ে নির্মিত অর্ধশতাধিক শিল্পকারখানার শ্রমিক, কর্মচারী, স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার হাজার হাজার শিার্থীর দুর্ভোগ চরমে ওঠে।
শত বছর আগে খরস্রোতা শিকলবাহা খালের ওপর তৎকালীন বিট্রিশ সরকার চার পিলারের একটি পাকা গার্ডার সেতু নির্মাণ করে এ অঞ্চলে যোগাযোগব্যবস্থা করেন। পরে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পর থেকে সেতুটি সংস্কার না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে পিলার ভেঙে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ দিন পর ১৯৯৫ সালে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী কর্নেল (অব:) অলি আহমদ গার্ডার সেতু ভেঙে এটিকে বেইলি সেতু নির্মাণ করে যোগাযোগ সচল করেন। পরে ২০০৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর একটি বার্জের আঘাতে তিন স্প্যানের কালারপোল সেতুর দু’টি স্প্যান বিধ্বস্ত হয়। পরে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ২০১৩ সালে তিন কোটি ৭৩ লাখ টাকায় বেইলি সেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয় ।২০১৪ সালে কাজ শেষের পর মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু সেতু নামে নামকরণ করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোলাগাঁও উইনিয়নের শত শত ছাত্র-ছাত্রী নদীর অপর পাড়ে কালারপোল স্কুলে পড়ালেখা করে। স্থিানয়ি বিভিন্ন কারখানার কর্মীদেরও নিয়মিত আসা যাওয়া করতে হয়। কালারপোল স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী রোকসানা দিলশাদ বলেন, নৌকায় উঠলে ভয়ে ভয়ে থাকি। যাত্রীর চাপ থাকায় ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ লোকও উঠে। আবহাওয়া খারাপ থাকলে সেদিন চোখ বন্ধ করে আল্লাহর নাম নিতে থাকি, কখন ওপারে যেতে পারব। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার ঘটেছে নৌকাডুবির ঘটনা।পটিয়ার এম,পি আলহাজ্ব শামশুল হক চৌং নিদ্দেশে ব্রীজের পুনারাই কাজ শুরু হলেও কাজের ধীরগতি দেখে জনগন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন।নামে মাএ ৫/৬ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ চালাচ্ছে।যা আদৌ কত বছর লাগবে জানা নেই।তবে সাধারন জনগনের ভোগান্তির শেষ কখন হবে জানা নেই কারো ।ছবি ফাইল ফটো
Discussion about this post