বিশেষ প্রতিনিধিঃঅবশেষে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হল বহুল আলোচিত দিনাজপুরের সেই সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফুল ইসলামকে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ দিয়েছে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার অফিস।
মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, মৃত্যুর পর তাকে গার্ড অব অনার না দেওয়া ও তার সন্তানকে চাকরিচ্যুত করার অপরাধে আরিফুল ইসলামকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। এদিকে সকালে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের কবর জিয়ারত করেছেন। এ সময় তাঁর ছেলে নূর ইসলামকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি চাকরির ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী একটি জিপ গাড়ি উপহার দিয়েছেন দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম হাসপাতালে।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যে গাড়িটি হাসপাতালে চলে আসলে সে গাড়িটিই চালাবেন নূর ইসলাম। জানা গেছে, দিনাজপুরের এসিল্যান্ড অফিসে (সহকারী কমিশনার ভুমি) অস্থায়ী ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধার পুত্র নুর ইসলাম গত ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর গাড়িচালক পদে চাকরি পান। চাকরি নেওয়ার পর থেকেই দিনাজপুরের এসিল্যান্ড (সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার-(ভূমি) আরিফুল ইসলাম) ও তার স্ত্রী নিজ বাড়ির বাজার করিয়ে নিতেন।
বাড়ির যাবতীয় অন্যান্য কাজও করিয়ে নিতেন আমার ভাই নুর ইসলামকে দিয়ে। এমনকি বাড়ির রান্না ও শৌচাগারও পরিষ্কার করিয়ে নিতেন। সম্প্রতি আমার ভাই কোনো অপরাধ না করলেও তাকে গাড়িচালক পদ থেকে চাকরিচ্যুত করেন এসিল্যান্ড আরিফুল ইসলাম।
এদিকে মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মানের ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে মানববন্ধন করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। এর আগে মুক্তিযোদ্ধাকে অসম্মানের সে ঘটনার প্রতিবাদে দিনাজপুর সদরের এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভূমি) আরিফুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে দিনাজপুরের ডিসি, এডিসি ও সদর এসিল্যান্ডকে অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানিয়েছিল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
রবিবার দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের কুলখানির অনুষ্ঠান শেষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সাইদুর রহমান এসিল্যান্ড আরিফুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে অবিলম্বে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জয়নুল আবেদিন ও এসিল্যান্ডকে দিনাজপুর থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার সরকারি কর্মকর্তাদের অসম্মানের কারণে শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় মর্যাদা (গার্ড অফ অনার) ছাড়াই দাফন সম্পন্ন করা হয় মরহুম মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের।
এ মুক্তিযোদ্ধার শেষ বিদায়ের সময় সেখানে বাজেনি বিদায়ের সুর। জানাজার আগে ম্যাজিস্ট্রেট মহসীন উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসনের চৌকস দল গার্ড অব অনার জানাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন। এমনকি মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের মরদেহ জাতীয় পতাকায় আচ্ছাদিত করা হয়নি। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়নি মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বরাররে এমন একটি চিঠি লেখার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা যান মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন ।
Discussion about this post