দেশকে ভালোবাসতে হলে সবার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জানতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান। তিনি বলেছেন, যখনই আন্দোলন সংগ্রামের ডাক দেওয়া হয়েছে অনেক বড় বড় নেতা নানা অযুহাতে চলে গেছেন। কিন্তু বাঙালির স্বাধীনতার জন্য একা রাজপথে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বুধবার (১৫ আগস্ট) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মো. আবদুল মান্নান বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো কৃতজ্ঞ মানুষ রাজনীতিকদের মধ্যে বিরল। জীবনে কেউ বঙ্গবন্ধুর একবার উপকার করলে বঙ্গবন্ধু তার দশবার উপকার করেছেন। তার রাজনীতিতে শালীনতা ছিলো। এখনকার রাজনীতির মতো গালিগালাজ ছিলো না। নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে পড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশকে ভালোবাসতে হলে, দেশের জন্য কাজ করতে চাইলে, দেশ প্রেমিক হতে চাইলে বঙ্গবন্ধুকে পড়তে হবে। তার জীবনী পড়ার মাধ্যমে সঠিক পথের দিশা পাওয়া যাবে। পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, আগস্ট শোকের মাস। কিন্তু এ শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা বাস্তবায়নে সবাইকে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের ধোঁয়া তুলে দেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রাকে থামিযে দিতে চায় একটি চক্র। বাংলাদেশ পুলিশের সাহসী ভূমিকার কারণে তাদের ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। ভবিষ্যতেও সফল হতে দেওয়া হবে না। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, পৃথিবীতে অনেক রাজনীতিক হত্যার কথা আমরা জানি। তাদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে একা। কিন্তু পুরো পরিবারসহ একজন রাজনীতিককে হত্যার ঘটনা বাংলাদেশেই প্রথম। পাগলের মতো, উন্মাদের মতো বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের সবাইকে হত্যা করেছে ঘাতকেরা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেওয়ার যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়, তা এখনো চলছে। আগস্ট এলেই ষড়যন্ত্রকারীরা বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করে। তাদের রুখে দিতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের সবার। তাকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। বিশেষ করে আমাদের শিশু-কিশোরদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে জানার স্পৃহা তৈরি করে দিতে পারলে এ জাতি কখনো বিপথে যাবে না। শিশু-কিশোরদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে ছড়িয়ে দিতে জেলা প্রশাসনের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক। সভায় আরও বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মোজাফফর আহমদ, জেলা কমান্ডার মো. সাহাব উদ্দিন। আলোচনা সভা শেষে শোক দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতা ও অসামাপ্ত আত্মজীবনী পড়ে বিজয়ী হওয়া ১৫ শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। শোক সভায় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা, স্থানীয় সরকারের পরিচালক দীপক চক্রবর্ত্তী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মোমিনুর রশিদ আমিন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. নুরুল আলম নিজামী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মো. মমিনুর রশিদ, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাশহুদুল কবীর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আমিরুল কায়ছার প্রমুখ। এর আগে নগরের সার্কিট হাউজ থেকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শোক র্যালী বের করা হয়। র্যালিটি নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়। এসময় শিল্পকলা একাডেমির বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
Discussion about this post