লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমীর স্নানে অংশ নিয়েছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার নারী-পুরুষ।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) ভোর থেকে শুরু হওয়া এই পূণ্যস্নানে জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে আগত পুণ্যার্থীদের ঢল নামে। দুপুর পর্যন্ত নানান আচার-অনুষ্ঠান পালন এবং পুজা-অর্চনার মাধ্যমে পুণ্যতোয়া খ্যাত ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করে পবিত্র হন তারা। তবে এবার কীর্ত্তন অনুষ্ঠান ও মেলা হয়নি।
প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টম তিথিতে চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ পুণ্যস্নান করে থাকেন। এ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী মেলা বসে এই নদের তীরে। মঙ্গলবার ছিল এই পুণ্যস্নানের দিন। এবার করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় লকডাউন অব্যাহত থাকায় প্রশাসনের অনুরোধে স্থানীয়ভাবে পুণ্যস্নানের কোনো প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। তৈরি করা হয়নি কোনো ঘাট। খাবারসহ অন্যান্য দোকানপাটও বসেনি এবার।
পুণ্যস্নান উপলক্ষে যেন মানুষ ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে জমায়েত হতে না পারে সেজন্য সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাবতলা এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে পথরোধ করা হয়। রিকশা-ভ্যান, অটোরিকশা সেখান থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ফিরিয়ে দেওয়া হয় পথচারীদেরও। কিন্তু সোমবার গভীর রাত থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। দলে দলে নারী-পুরুষ ও শিশু পায়ে হেঁটে এসে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ের পুটিমারী এলাকায় এসে জড়ো হন।
এছাড়া নৌ-পথে রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধাসহ জেলার রৌমারী, উলিপুর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, ফুলবাড়ী ও রাজারহাটসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মানুষ আসলে পুরো এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। পুণ্যস্নানে আসা অধিকাংশ মানুষের মুখে ছিল না মাস্ক। মানা হয়নি সামাজিক দূরত্ব।
এ প্রসঙ্গে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ বলেন, সোমবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত চিলমারীর দিকে আসা যানবাহন ও মানুষকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপর থেকে পায়ে হাঁটা মানুষের ঢল নামে। সেইসঙ্গে নৌ-পথে দলে দলে মানুষ আসতে থাকে। ফলে ব্রহ্মপুত্র নদের পুটিমারী ঘাটের দিকে আসা জনস্রোত ঠেকানো যায়নি।
এ অবস্থায় পুণ্যার্থীরা যেন দ্রুত স্নান শেষ করে স্থান ত্যাগ করেন সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ফলে বিকেল ৪টার মধ্যে লোকজনকে সরানো সম্ভব হয়েছে।