সম্পাদকীয়ঃগত কয়েক দশকে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নিয়ে আত্মতৃপ্তির নানারকম কথা শোনা গেলেও সড়ক নিরাপত্তার চিত্র সম্পূর্ণ এর বিপরীত। নিরাপদ সড়কের আন্দোলন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল। এবার এ আন্দোলনে নতুন মাত্রা দিল শিক্ষার্থীরা। সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনার কারণগুলো অচিহ্নিত নয়। এ নিয়ে নতুন করে আলোচনা নিষ্প্রয়োজন। কারণ চিহ্নিত হওয়া সত্ত্বেও এর প্রতিকার নিশ্চিত না করাতে পারার কারণগুলোও সচেতন মানুষের অজানা নয়। সড়ক দুর্ঘটনা উন্নত দেশেও হয়। কিন্তু আমাদের দেশের মতো এ হার এত উচ্চ কি-না এবং এমন প্রতিকারহীন কি-না এগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বটে। দুর্ঘটনা যেহেতু মানুষের ইচ্ছা-নিরপেক্ষ এবং বোধগম্য কারণ ছাড়াই আকস্মাৎ ঘটতে পারে সেহেতু অনেক সময় দুর্ঘটনাকে অসহায়ভাবে না মেনে উপায় থাকে না মানুষের। কিন্তু আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনার সঙ্গে কিছু মানুষের দায়িত্বহীনতা, স্বেচ্ছাচারিতা, হীনস্বার্থ এমন বিষয় ক্রমেই নগ্নভাবে ধরা পড়ছে। ফলে সহিষ্ণুতার সীমা ভেঙে সমাজে দুর্ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভের প্রকাশ শেষ পর্যন্ত এ রূপ নিয়েছে। কোনো খাতে অনিয়ম যদি নিয়ম হয়ে যায়, তখন সেই খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের পরিবহন খাতের অবস্থাটা হয়েছে সে রকমই। কাজটা কঠিন হলেও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে যত রকম ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সে সবই করতে হবে কঠোর অবস্থান নিয়ে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মিছিল থামাতেই হবে।
Discussion about this post