চট্রগ্রাম নগরবাসীকে অসন্তুষ্ট করে কর আদায় সমীচীন হবে না বলে মত প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
সোমবার (৭ নভেম্বর ২০২২ইং) বিকেলে উত্তর কাট্টলীস্থ নিজ বাসভবনে নাগরিক উদ্যোগের নীতিনির্ধারণী সভায় উক্ত অভিমত প্রকাশ করেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন গৃহকর (হোল্ডিং ট্যাক্স) আদায় নিয়ে চট্রগ্রাম নগরীতে কর দাতাদের মাঝে অসন্তুষ্টি বিরাজ করছে। এতে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন চট্রগ্রাম নগরের বাসিন্দাগণ।
নগরবাসীর আশংকা বাড়তি গৃহকর সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করবে। আর এতে করে চাপে পড়বেন ভবনমালিক ও ভাড়াটিয়া উভয়েই।
তিনি আরো বলেন এরশাদ সরকারের আমলে প্রণীত ‘দ্য সিটি কর্পোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অনুসারে বর্তমানে বাড়ি ভাড়ার ভিত্তিতে সিটি কর্পোরেশন গৃহকর আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ করলে এ আইন বাতিল করে আয়তনের ভিত্তিতে গৃহকর আদায়ের জন্য আন্দোলনে নামে করদাতা সুরক্ষা পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন।
সিটি কর্পোরেশনের সাথে চট্রগ্রাম নগরবাসীর দূরত্ব সৃষ্টি এবং জনগনের নাগরিক সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে?
তাই বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক এই প্রশাসক।
প্রয়োজনে রাষ্ট্র ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ সংক্ষুব্দ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে একটি যুক্তিসঙ্গত কর ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার জন্য মেয়রের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
যাতে করে কর দাতাগণ কর দিতে উৎসাহিত হবেন এবং এর ফলে সিটি কর্পোরেশনের কর আদায়ও অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে কিন্তু শুধু নগরবাসীর কাছ থেকে কর আদায় করে চট্টগ্রাম শহরের মতো এতো বৃহৎ শহরের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। এ শহরকে ব্যবহার করে যারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তাদের কাছ থেকে উপযুক্ত সার্ভিস চার্জ আদায়ের মাধ্যমে শহরকে উন্নত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
সাবেক প্রশাসক বলেন সিটি কর্পোরেশনের দৈনন্দিন ব্যয় মেটানোর জন্য টাকার প্রয়োজন।
চট্রগ্রামের নগরবাসী কিন্তু সিটি কর্পোরেশন কে দৈনন্দিন ব্যয় মেটানোর জন্য কর দিতে প্রস্তুত তবে সেটা কোনভাবেই করদাতাদের কে অসন্তুষ্ট কিংবা জোরজবরদস্তি করে সম্ভব নয়।
ইতিপূর্বে অনেক মেয়রগণও বাড়ি ভাড়ার ভিত্তিতে কর আদায় করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।
তাই মেয়র কে অনুরোধ জানাবো আপনি নগরপিতা, এ নগরের কোন নগরবাসী অসন্তুষ্ট হন সেটা নিশ্চয়ই আপনি চাইবেন না। সিটি কর্পোরেশনের কতিপয় আমলাচক্র সুকৌশলে সরকারের সাথে জনগনের দূরত্ব সৃষ্টি করার প্রয়াসে আপনার মাধ্যমে এ আইন বাস্তবায়ন করাতে চাইছে কিনা সে ব্যাপারেও সজাগ থাকার অনুরোধ জানান তিনি।
এছাড়া বর্ধিত গৃহকর কমানোর জন্য ঘুষ আদায়ের দায়ে রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করায় চসিক মেয়রকে অভিনন্দন জানান খোরশেদ আলম সুজন।
নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ এবং সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন এর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রুহুল আমিন তপন, আব্দুর রহমান মিয়া, সাইদুর রহমান চৌধুরী, ছালেহ আহমদ জঙ্গী, নুরুল কবির, সমীর মহাজন লিটন, মো. শাহজাহান, জাহাঙ্গীর আলম, শহীদুল আলম লিটন, এম. ইমরান আহমেদ ইমু, মো. ওয়াসিম প্রমুখ।
Discussion about this post