নুর আলমঃতাহারা ৩ বান্ধবী শেলি (১৪) শাবানা (১৪) এবং জুলেখা (১৩)। সংগত কারণেই তাদের ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে।এই ৩ জনই বায়েজিদ থানার অন্তর্গত ধ্বনি পাহাড় এলাকায় বসবাস করে ও স্থানীয় একটি স্কুলে পড়ালেখা করে।
গত ২৯ জুলাই তিন বান্ধবীই বাসায় রাগ করে একযোগে বেরিয়ে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে টাইগার পাস মামা ভাগ্নের মাজারে চলে আসে। রাত সাড়ে আটটার দিকে তারা ৩ বান্ধবী টাইগারপাস নিরিবিলি হোটেলের সামনে আসলে অজ্ঞাতনামা ১ লোক তাদের সাথে কথা বলতে চায়।
কথা বার্তার এক পর্যায়ে লোকটি তাদের সাথে ভাব জমায়। লোকটি তাদের অসহায়ত্ব বুঝতে পারে। মেয়েরা লোকটিকে জানায় তাদের রাতে কোথাও থাকার জায়গা নেই। লোকটিকে সাহায্য করার অনুরোধ করে। তখন লোকটি মোবাইলে কার সাথে যেন কথা বলে। কিছুক্ষণ পর দুজন লোক মোটরসাইকেল যোগে আসে এবং জানায় তাদের ফ্যামিলি বাসায় থাকার জায়গা আছে।
মেয়ে গুলো সরল বিশ্বাসে মোটরসাইকেল ও সিএনজি যোগে আগত দুইজন লোক সহ খুলশী এলাকার খুলশী আ/এ রোড ৩/এ বাড়ি নং ২২এ তে রাত ১১ টার দিকে যায়। বাড়ির দারোয়ান গেট খুলে দিয়ে তাদের প্রথমে নিচে বসতে দেয়। কিছুক্ষণ পর তাদের সকলকে ভেতরের দিকে নিয়ে যায়। এরপর তিন বান্ধবীর ওপর সারারাত ধরে চলে পাশবিক নির্যাতন তথা ধর্ষণ। মেয়েদের চিৎকার অপরাধীর অপরাধ থামাতে পারেনি।
ভোর বেলায় মেয়েগুলোকে বাসায় রেখে মোটরসাইকেল আরোহী ধর্ষক দুইজন চলে যায়। সকালবেলা মেয়েগুলো বাসায় ফিরে গেলে সমস্ত ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।এর পর মেয়ে তিনজনের অভিভাবক সহ থানায় আসেন। ঘটনার বিস্তারিত শুনে নিয়মিত মামলা হয়।
এরপর প্রথমে সেই বাসার দারোয়ান মোহাম্মদ ওমর ফারুক (৪৬) পিতা-মৃত আব্দুল হামিদ আদ্রা নাঙ্গলকোট কুমিল্লা কে আটক করা হয়। কিন্তু দারোয়ান কোনক্রমেই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে না। মেয়েগুলোকে সে চেনে না বলে জানায়। কিন্তু পুলিশও ছাড়ার পাত্র নয়, তারা দারোয়ানের মোবাইলের কল রেকর্ড যাচাই করেন। কল রেকর্ড যাচাই করে দেখা যায় রাত ১১ ঘটিকার আগে একই নম্বরে দারোয়ানের সাথে অনেকবার কথোপকথন হয়েছে। উক্ত সন্দেহজনক মোবাইল নম্বর নিয়ে কাজ শুরু করা হয়। ইতিমধ্যে দারোয়ানকে ৩০ জুলাই বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। সন্দেহজনক মোবাইল নম্বরটির প্রযুক্তির মাধ্যমে ছবি সংগ্রহ করে ভিকটিমদের দেখানো হয়। ভিকটিমরা ছবি দেখে ধর্ষকদের শনাক্ত করে। এরপর শুরু হয় অভিযান।
টানা ৪৪ ঘন্টার অভিযান শেষে ৫ জুলাই দিবাগত রাতে সেগুন বাগান এলাকা থেকে অপরাধ কর্মে ব্যবহৃত মোটর সাইকেলসহ ধর্ষক
(১) মোহাম্মদ লিটন (৩৭) পিতা মোঃ কামাল উদ্দিন ধর্মপুর সুধারাম নোয়াখালী বর্তমানে সেগুনবাগান ৫ নং লেইন খলিল এর বাসা খুলশী চট্টগ্রাম এবং (২) মোঃ সোহেল রানা রাজু (২৮) পিতাঃ মোঃ শাহজাহান সরদার বাড়ি মনোহরগঞ্জ কুমিল্লা বর্তমানে লালখান বাজার তুলা পুকুর পাড় শাকিল এর বাসা ।
তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খুলশী থানার ওসি প্রনব চৌধুরী জানিয়েছেন৷তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার স্বীকার করে।মোঃ লিটন জানায় সে একসময় ঘটনাস্থলের খুলশীর সেই বাসায় ড্রাইভার হিসেবে নিযুক্ত ছিল। বর্তমানে উক্ত বাসার মালিক তার পুরো পরিবার নিয়ে প্রবাসী হয় বাড়িটি একদম ফাঁকা।
এই সুযোগে দারোয়ানের সহযোগিতায় উক্ত বাসায় সে বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। বর্তমানে তার একটি নোয়াখালী লাইনে বাস আছে। আসামি রাজু পেশায় শহর এলাকার ৬ নং পরিবহনের ড্রাইভার। তাদেরকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করে ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে বলে জানান ওসি প্রণব চৌধুরী৷
Discussion about this post