মোঃ ফয়সাল এলাহীঃবুধবার থেকে নগরীর পাহাড় এবং পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। আগ্রাবাদ সার্কেলের ভারপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মনসুর স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ছয়জন ম্যাজিস্ট্রেট। মতিঝর্ণা, বাটালি হিল, আমিন কলোনি টাংকির পাহাড়, মিয়ার পাহাড়, এ.কে খান পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে অনেকে বসবাস করছে। অগ্রাধিকারভিত্তিতে এসব পাহাড়ে এবং পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেনের কাছে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন প্রেরণের নির্দেশনা রয়েছে। এসব পাহাড়ে প্রতিবছর বর্ষার সময় পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে আসছে। ২০১৫ সালে রমজানের ঈদের দিন আমিন কলোনির টাংকির পাহাড় ধসে একই পরিবারের তিন শিশু নিহত হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমিন কলোনি টাংকির পাহাড়টি কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রতিনিয়ত কেটে কেটে বসতবাড়ি নির্মাণ করে নিম্ন আয়ের লোকজনকে ভাড়া দিয়ে মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করে আসছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলেন আবদুর রউফ হাজারীর পুত্র জসিম উদ্দিন হাজারী (৪২), মৃত মোশাররফ সর্দারের পুত্র মোস্তাফিজুর রহমান কাউসার, আফজাল, নজির আহমদের পুত্র আসাদুল হক, ফরিদ উদ্দিন পাটোয়ারির পুত্র মোরশেদ সর্দার এবং আবদুল মান্নান মুন্সির পুত্র মিজান। একইভাবে বাটালি হিল, মতিঝর্ণাসহ বিভিন্ন পাহাড়ে প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি নির্মাণ করে সাধারণ মানুষকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, অতীতে বর্ষাকালে পাহাড়ধসে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আমরা চাই না এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক। তাই আগে–ভাগেই ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে দিতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীরা যাতে সরে যায়, সে লক্ষ্যে আগে–ভাগে প্রচারণা চালানো হয়, মাইকিং করা হয়। এবারো করা হচ্ছে। প্রশাসনের আহ্বানে যারা সাড়া দেবে না, তাদেরকে উচ্ছেদ করা হবে। অভিযানশেষে অর্থাৎ ম্যাজিস্ট্রেট চলে যাবার পর সেখানে যাতে কেউ পুনরায় বসতি স্থাপন করতে না পারে এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরদের সহযোগিতা নেয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্ছেদ অভিযানের পর ওসব জায়গা স্থানীয় কাউন্সিলরের জিম্মায় দেয়া হবে। জানতে চাইলে ৭নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোবারক আলী বলেন, ২০১৫ সালে ঈদের রাতে আমিন কলোনি টাংকির পাহাড় এলাকায় পাহাড়ধসে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু ঘটেছিল। এই ধরনের অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু এড়াতে জেলা প্রশাসন ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে। এ কাজে জনপ্রতিনিধি হিসেবে তার সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডবাসীর জান–মাল রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। আমিও ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহবান জানাই।