করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় রমজানে তারাবি ও ওয়াক্ত নামাজে ইমামসহ ২০ জনের বেশি মুসল্লীর অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা না মেনে চান্দগাঁও আবাসিক জামে মসজিদে নামাজ পড়া নিয়ে ব্যাপক হট্টগোল হয়েছে।
মসজিদে অতিরিক্ত মুসল্লীরা প্রবেশ করে কিন্তু পুলিশ গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩০ মুসল্লীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) এশার নামাজের সময় চান্দগাঁও আবাসিক কল্যাণ সমিতি জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চান্দগাঁও আবাসিক কল্যাণ সমিতির সদস্য ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির অর্থ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন বলেন, আমরা সরকারি আদেশ মেনে মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন খাদেমসহ স্টাফদের নামাজের ব্যবস্থা করে সবাইকে ঘরে নামাজ পড়ার অনুরোধ করেছি। এমনকি আমরা কমিটির লোকজনও ঘরে নামাজ পড়ছি। প্রথম তারাবির দিন মসজিদের তালা ভেঙে মসজিদে প্রবেশ করেছে। দ্বিতীয় দিনও জোর করে শত শত লোক প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ এসে বাধা দেয়। কিন্তু এসময় ওসির সাথে ধস্তাধস্তি হয়, পুলিশের গাড়িতে ঢিল মারে।
তিনি আরও বলেন, এখানে আবাসিক সমিতির লোকজন নেই। পরে পুলিশ প্রায় ৩০ জনকে ধরে নিয়ে গেছে। এখন পুলিশ তাদের বিষয়ে কি করে সেটা তাদের বিষয়।
পরিদর্শক (তদন্ত) রাজেশ বড়ুয়া বলেন, সরকারি আদেশ অমান্য করে মসজিদে ব্যাপক লোকজন প্রবেশ করা নিয়ে কমিটির সাথে মুসল্লীদের সমস্যা হয়। সমিতির অনুরোধে থানা পুলিশ সেখানে গেলে উত্তেজিত মুসল্লীরা পুলিশের ওপর হামলা করতে চায়। ঢিলও ছুড়ে। পরে সেখান থেকে ৩০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।
সোমবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনায় বলা হয়, বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস ভয়াবহ মহামারি আকার ধারণ করায় যথাযথ সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে ১৪ এপ্রিল হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মসজিদে নামাজ আদায়ে নিম্নোক্ত নির্দেশনা জারি করা হলো।
নির্দেশনাগুলো হলো মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রতি ওয়াক্তে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন। তারাবির নামাজে খতিব, ইমাম, হাফেজ, মুয়াজ্জিন ও খাদিমসহ সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন।
নির্দেশনায় প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানায় মন্ত্রণালয়।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সোমবার (১২ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
ফাইল ফটো