মানুষের জীবনে সাফল্যের অনেকগুলো সংজ্ঞা থাকতে পারে তবে সাফল্য পরিমাণ করার বহুল কিছু মাধ্যম আছে। এরমধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য মাধ্যম হচ্ছে, জ্ঞান, শান্তি, ধন-সম্পদ সামাজিক অবস্থা এবং মুখের ব্যবহার ও মানুষের ভালোবাসা। এগুলো যদি আপনার মধ্যে থাকে আপনি নিজেকে সফল বলতে পারেন।
সফল এমন কিছু বিষয় যা রাতারাতি অর্জন করা যায় না, এর জন্য কঠোর পরিশ্রম অধ্যবসায় সংকল্প, এবং প্রচন্ড ইচ্ছে শক্তি প্রয়োজন, কোন কাজে সাময়িক ব্যর্থ মানে এ যে আপনি হতাশ হবেন। আপনি সৃষ্টির সেরা জীব আপনাকে হতাশ হওয়া মানাবে না। আপনার ভেতরে থাকা সুপ্ত প্রতিভাকে জাগাতে হবে। তেমনি, চট্টগ্রামের ছেলে মোহাম্মদ জিন্নাত আলী মিডিয়া জগতে পর্দার আড়ালে কাজ করতে পিছু হটেনি।
তিনি ছোটবেলা থেকেই বিনোদন মুখি ছিলেন, ১৯৯৯ সালে মঞ্চনাটক হত। মঞ্চনাটকে তিনি একসময় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের রিহার্সাল দেখতেন। একসময় সুযোগ পেয়ে যান একটি চাকর চরিত্র অভিনয় করার সেই নাটকে অভিনয়ে দর্শক নন্দিত হন। তখন থেকে শুরু একের পর এক মঞ্চ নাটকের অভিনয় করার। প্রায় ২৫ টি মঞ্চনাটকে অভিনয় করার পর মঞ্চ নাটক লেখা শুরু করেন তিনি। তার লেখা নাটক মঞ্চায়িত হয় মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক নাটক রক্তভেজা শার্ট, মরণ যদি হয় । চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় রচিত মনের সাম্পানে আরো অসংখ্য নাটক। শুধু তাই নয় তিনি বড় বড় নামিদামি হোটেলে ইভেন্টের প্রোগ্রাম করতেন। বাংলাদেশের স্বনামধন্য ও চলচ্চিত্র শিল্পীদের কে নিয়ে, ফ্যাশন শো ও মডেলিং নিয়ে ক্যাটওয়াক ও বিজ্ঞাপন নির্মাণ কাজ করেছেন। ১৯৯৬ সালে বিটিভির প্যাকেজ নীতিমালার আওতায় জিন্নাত আলী পরিচালনায়ও পরিকল্পনায় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ও মুখর ১২শত দর্শক উপস্থিতিতে ২৪শে অক্টোবর ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শুটিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়।
দুঃখের বিষয় অনুষ্ঠানটি বিটিভির প্রিয় কমিটিতে জমা দেয়ার পর রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে আপিল করার জন্য চিঠি দেন। ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান অপরূপ , জিন্নাত আলী গ্রন্থনা ও পরিকল্পনায় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান অপরূপ ৩৫ পর্ব প্রচার হয়। ২০০৫ সালে জিন্নাত আলী শুরু করেন মিউজিক ভিডিও ও টেলিভিশন ভিডিও। সিড়িতে সাউন্ডট্র্যাক থেকে পরিবেশিত হত, মিউজিক ভিডিও টেলিফিল্ম এডিটিং গ্রাফিক্স ডিজাইন নিজেই সম্পাদনা করতেন। উল্লেখযোগ্য যেসব মিউজিক ভিডিওর টেলিফিলিম বানিয়েছেন তারমধ্যে, চুপিচুপি প্রেম এ মন মানে না, যারে চাইলাম তারে পাইলাম, সুন্দরী মাইয়া, ফুলের মালা, চুপি চুপি প্রেম। এছাড়া ইসলামিক অনুষ্ঠানও করছেন। শুধু তাই নয় তিনি ক্যামেরাম্যান হিসেবে খুব দক্ষ ছিলেন ।
২০১০ সালে এটিএন নিউজের উদ্বোধন এর শুরু থেকে জিন্নাত আলীর বানানো হোম ভিডিও প্রায় সাতটি আইটেম এটিএন নিউজের চ্যানেলে নিয়মিত ভাবে প্রচারিত হয়। ২০০৭ সালে অপরূপ প্রোডাকশন ব্যানারে তার পরিচালনায় নির্মিত একের পর এক, মিউজিক ভিডিও ও টেলিফিল্ম ভিডিও সিডি বের হয়।
সবশেষে ডিজিটাল যুগে যোগ দেন, জিন্নাত আলী অপরূপ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান থেকে অপরূপ প্রোডাকশন হাউজ, প্রোডাকশন হাউজ থেকে অপরূপ টিভি অনলাইন। অপরূপ টিভি অনলাইন ২০১৭ সাল থেকে প্রায় পাঁচ বছর চালিয়ে যাচ্ছে। এতে প্রায় ইনভেস্ট করা হয়েছে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যদি এই চ্যানেলটির নিবন্ধন হয় কমপক্ষে ১০০ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সবশেষে জিন্নাত আলী কে প্রশ্ন করি আপনার শেষ ইচ্ছা কি? তিনি বলেন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো।