ইসলাম ধর্ম মতে কুরবানী হচ্ছে নির্দিষ্ট দিনে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পুরস্কার লাভের আশায় নির্দিষ্ট পশু জবেহ করা।
মুসলমানদের পবিত্র আল কোরআনের তিনটি স্থানে কুরবানির উল্লেখ আছে যার একটি পশু কুরবানির ক্ষেত্রে এবং বাকি দুটি সাধারণ ভাবনার কাজ বোঝাতে যা দ্বারা আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া যায়।মুসলমানের ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে পবিত্র ইদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ অন্যতম।
এই দিন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদের নামাজ আদায় করে মহান আল্লাহ্ তায়ালার নৈকট্য লাভের আশায় পশু কোরবানি করে থাকেন।
এই কোরবানী আদায় হওয়ার বিষয়ে কিছু শর্তাবলী রয়েছে।
যেমনঃকোরবানির উদ্দেশ্য যে পশু ক্রয় করা হবে সেটা যেনো সুঠাম দেহের অধিকারী হয়, কেননা কোরবানি এটি শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যেই দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে সমাজে দেখা যায় কিছু কিছু লোক কোরবানির উদ্দেশ্য ক্রয় করা গরু বা ছাগলের লড়াই দিয়ে থাকে ।
লড়াই করতে গিয়ে সেই গরু বা ছাগলের শিং ভেঙ্গে যাচ্ছে, শরীরের আঘাত লেগে শরীরের চামড়া কেটে গিয়ে রক্ত বের হচ্ছে, সেই গরু বা ছাগল দিয়ে আবার কোরবানিও দিচ্ছে, এটা কি কোরবানির হক আদায় হচ্ছে?
শুধু তাই নয় একটি কোরবানি পশুর মাংস তিন ভাগে ভাগ করার বিধান রয়েছে তন্মধ্যে একভাগ নিজের জন্য আরেকভাগ নিজের আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে গরীব তাদের জন্য তৃতীয় ভাগ সমাজের গরীব মিসকিন অসহায় মানুষের মাঝে বন্টন করা।
এই তিনভাগে ভাগ করে মানুষের মাঝে বন্টন করার উদ্দেশ্য হলো ধনী গরীব সবাই যেনো সমভাবে মাংস খেতে পারে এবং ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে পারে।
কিন্তু ঈদের দিন দেখা যায় সমাজে গরীব অসহায় মানুষ রাস্তায় রাস্তায় কোরবানির মাংস পাওয়ার জন্য ছুটে বেড়ায়,এর কারণ হলো যারা কোরবানি করছে কিন্তু কোরবানির মাংস সঠিকভাবে বন্টন করছে না যার ফলে মাংসের জন্য কিছু মানুষ এদিক ঐদিক এভাবে ছুটে বেড়ায়।
বর্তমানে সবচাইতে হৃদয় বিদারক চিত্র হলো সমাজের মধ্য শ্রেণী পেশার মানুষের অবস্থা। কারণ নিন্ম শ্রেনীর মানুষ জন বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করে হয়তো মাংসের ব্যবস্থা করতে পারে কিন্তু সমাজের মধ্যম আয়ের মানুষ গুলো তো কারও কাছ থেকে চাইতে পারে না ফলে গুমরে গুমরে কাঁদে তারা।
সমাজে এমনও মানুষ রয়েছে যারা পুরো বছরে একদিনও মাংস খেতে পারছে না।
তাই যারা কোরবানি করে তাদের দায়িত্ব কোরবানির মাংস বন্টনের ক্ষেত্রে সমাজের মধ্যম আয়ের মানুষ গুলোর প্রতি যেনো নজর রাখেন।
লোক লজ্জার ভয়ে মধ্যবিত্ত মানুষ গুলো কারও কাছে চাইতে পারে না তাই আমরা যারা কোরবানি করবো তারা যেনো ঐ মানুষ গুলোর সম্মান বজায় রেখে তাদের প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেই।
আমাদের সকলের এই চিন্তা চেতনা থাকতে হবে যে, সমাজের কোন মানুষ যাতে কোরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত না হয়। এভাবেই সমাজের সকলে মিলে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগির মাধ্যমে ঈদ উদযাপন করবো।
Discussion about this post