শেখ সেলিম,সম্পাদকীয়ঃইয়াবাএকটা সামাজিক ব্যাধিও বটে । ইয়াবা বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে কোথায় ইয়াবা বা অন্য কোনো নেশার ড্রাগ তৈরি হচ্ছে এবং বেআইনিভাবে বাংলাদেশে বিক্রি হচ্ছে এটা আসল কথা নয়। বাংলাদেশের কোথায় কোথায়, কোন এলাকায় বা কোন বাজারের কোথায় এগুলো বিক্রি হচ্ছে এটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আসল ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, অল্পবয়স্ক লাখ লাখ বাংলাদেশি এখন এভাবে নেশাগ্রস্ত হচ্ছে কেন? এ ধরনের তো আগের আমলে এবং বাংলাদেশেও আগে ছিল না। এখন কেন এভাবে অল্পবয়স্করা, বিশেষ করে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা, বেকার যুবকরা, শ্রমজীবীরা ইয়াবা সেবন করছে এবং নেশাগ্রস্ত হয়ে নিজেদের জীবনের সুখ-শান্তি ও সম্ভাবনা বিনষ্ট করছে।নেশার বস্তুর মধ্যে দুটি মদ ও তামাক হল প্রাচীন এবং এ দুই-ই ভদ্রভাবে খাওয়া যায়। প্রকাশ্যে পার্টিতেও মানুষ খেয়ে থাকে। আমাদের দেশে আগে একজন মদ্যপায়ী হলে তাকে আড়ালে লুকিয়ে যেভাবে মদ খেতে হতো অসভ্যের মতো, এখন সেভাবে আর হয় না। অতিরিক্ত মদ খেয়ে মাতাল হয়ে মানুষ যেভাবে আচরণ করত, বাড়িতে এসে বউ পেটাত, সেরকম ঘটনা এখন বিরল। তামাক সেবন একটা নেশা বটে, তবে নেশা হিসেবে খুব ভদ্র। এজন্য লুকিয়ে-চুরিয়ে তামাক খাওয়ার প্রয়োজন হয় না, যদিও স্বাস্থ্যের পক্ষে এটা হানিকর এবং এর বিরুদ্ধে অনেক লেখালেখিও হয়ে থাকে।কিন্তু হেরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা ইত্যাদি ড্রাগ শুধু যে স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে মারাত্মক ক্ষতিকর তাই নয়। এটা একটা সামাজিক ব্যাধিও বটে। কারণ এই নেশায় যারা আক্রান্ত হয় তারা শুধু নিজেদের নয়, সমাজেরও ক্ষতি করে।যেহেতু অল্পবয়স্করা এই নেশা করছে, তার ফলে নোতুন প্রজন্ম এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সামগ্রিকভাবে সমাজের ভবিষ্যতের জন্যও এটা এক হুমকিস্বরূপ। এ ধরনের নেশা প্রকৃতপক্ষে একটা সামাজিক ব্যাধি।এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে সামাজিক অবস্থার ওপর। আগের যুগে বা কয়েক যুগ আগে এটা ছিল না, তার কারণ তখন তরুণ ও যুবকদের মধ্যে দেশের ও সমাজের উন্নতির চিন্তা থাকত, এজন্য তারা অনেকে সংগ্রাম করত এবং তার মধ্যেই নিজেদের ভবিষ্যৎও দেখত। অনেক রকম আশা ও প্রত্যাশার দ্বারা তাড়িত হয়েই তারা জীবনকে এমনভাবে দেখত যাতে তাদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতো না। নেশার দিকে ঝোঁকার কোনো প্রয়োজন তারা বোধ করত না।বাংলাদেশের নোতুন প্রজন্ম যে কোন নেশা কে না বলার এখনই সময় ।