চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাতটি ওয়ার্ডের দ্বৈত কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
(২৭ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মিলনায়তনে নগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগরের কয়েকটি ওয়ার্ডে সাংগঠনিক দুর্বলতা দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘আগামী ৩০ জুন গণভবনে আমাদের দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলের নেতাদের নিয়ে বর্ধিত সভা করবেন। প্রত্যেক ইউনিয়নের সভাপতি, সম্পাদক; সিটি করপোরেশনের অধীনে প্রত্যেক ওয়ার্ডের সভাপতি, সম্পাদক, নির্বাচিত কাউন্সিলদের নিয়ে এ বর্ধিত সভা।’
‘তাই দুয়েকদিনের মধ্যে দ্বৈত কমিটি ভেঙে একটি করে আহবায়ক কমিটি গঠন করতে হবে। আর যেসব ওয়ার্ডে সভাপতি, সম্পাদক মারা গেছেন, সেই সব ওয়ার্ডে পরবর্তী জন অর্থাৎ সভাপতি হলে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক হলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পালন করবেন।’
পরবর্তীতে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রত্যেক ওয়ার্ডে পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করার নির্দেশনা জানিয়ে মাহবুব উল আলম হানিফ আরও বলেন, ‘ঢাকার পরে চট্টগ্রাম হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী। রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক দিক দিয়ে ঢাকার পর চট্টগ্রামকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই সাংগঠনিকভাবে চট্টগ্রামকে আরও শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন।’
‘যতটুকু তথ্য পেয়েছি চট্টগ্রাম মহানগরের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টি ওয়ার্ডে দ্বৈত কমিটি এবং চারটি ওয়ার্ডের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক মারা গেছেন। সেখানে একজন করে দায়িত্ব পালন করছেন। নগরের বেশির ভাগ ওয়ার্ড কমিটি এখনো পুর্নাঙ্গ করা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে চলছে। সংগঠনের দুর্বলতাকে কাটিয়ে তোলাই হচ্ছে বর্ধিত সভার মূল উদ্দেশ্য। শিগগিরই এ দুর্বলতা কাটিয়ে তুলতে হবে।‘
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে এক নেতার এক পদ। তাই এক ব্যক্তি একাধিক পদে থাকার সুযোগ নেই। যিনি একাধিক পদে আছেন, তিনিই সিদ্ধান্ত নেবেন, কোন পদে থাকতে চান তিনি।
আজকে থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হবে।’ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার তাগিদ দিয়ে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন অক্টোবর মাসে তফসিল ঘোষণা করবে। আগামী নির্বাচনে আমাদের বিজয় হতেই হবে। এর বিকল্প নেই। এ নির্বাচন যে খুব সহজ হবে তা কিন্তু নয়। বিএনপি-জামাত এবারও নির্বাচন বানচাল করতে নানা ষড়যন্ত্র করতে পারে। গত নির্বাচনে এ অশুভ শক্তি দেশে জ্বালাও-পোড়াও করেছে। এ বিষয়ে আমাদের সক্রিয় থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ উন্নয়ন-অগ্রগতি চায়। ভাগ্য পরিবর্তন চায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের মানুষ জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ভোট দেবে, নৌকা মার্কায় ভোট দেবে। গাজীপুরের নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে, মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারকে চায়। জনগণ আওয়ামী লীগের পক্ষে। তবুই অশুভ শক্তি বিএনপি-জামাতকে পরাজিত করতে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী ও গতিশীল করতে হবে।
বিএনপি-জামাতকে মানুষ আর ক্ষমতায় আসতে দেবে না বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। বর্ধিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সহ-সম্পাদক এম রেজাউল করিম, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীসহ নগরের দশ ওয়ার্ডের সভাপতি, সম্পাদক বক্তব্য রাখেন।
Discussion about this post