কক্সবাজারের মহেশখালীতে যুদ্ধাপরাধ মামলার এক পলাতক আসামির মৃত্যু হয়েছে। তার নাম নাম সাইফুল ইসলাম প্রকাশ সাবুল (৬০)। তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় নারী নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ হত্যা, গণহত্যা, ধর্মান্তরসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোরী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রামে-২নং গেইট এলাকায় সিএন্ডবি কলোনির একটি বাসায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
সাইফুল ইসলাম ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের ডেইল পাড়া গ্রামের মৃত এজাহার মিয়ার ছেলে। তার অপর ভাই মমতাজ আহাম্মদও যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি। তিনিও পলাতক রয়েছেন।
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কক্সবাজারের মহেশখালীতে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। সেখানে শতাধিক লোককে হত্যা করা হয়। গণধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগসহ হিন্দু ও বৌদ্ধদের মন্দির আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। তিনশত বছরের পুরনো রাখাইন মন্দির ধ্বংস করে দেয়া হয়।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সমন্বয়ক সানাউল হক জানান, আমরা সেখানে গিয়ে তদন্ত করেছি। অনেক সাক্ষী পাওয়া গেছে। মহেশখালীতে হিন্দুদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে মুসলমান করা হয়েছে। অনেক হিন্দুকে খতনা করা হলে তারা ইনফেকশনের কারণে মারা গেছে। এ ঘটনার অভিযোগে সাইফুল ইসলাম বাবুল প্রকাশসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ২২ মে মামলা দায়ের হয়েছিল। এ মামলায় মোট ১২৬ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
মামলার প্রসিকিউটর তাপস বলেন, মামলাটির তদন্তে ১৯ আসামির নাম এসেছিল। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল পাঁচজনকে। ওই পাঁচজনের মধ্যে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য রশিদ মিয়া জামিনে থাকা অবস্থায় গত ২৯ মার্চ মারা যান।
তার আগে আরও এক আসামি জামিনে থাকা অবস্থায় এবং গ্রেপ্তার অবস্থায় অসুস্থ হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়। ফলে শেষ পর্যন্ত অভিযোগ গঠন করা হল ১৬ জনের বিরুদ্ধে। আজ আরেক আসামি সাইফুল ইসলামের মৃত্যু হওয়ায় বাকি ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হবে।
এ বিষয়ে মহেশখালীর থানার ওসি প্রদীপ দাশ জানান, আমরা খবর পেয়েছে যুদ্ধাপরাধীর মামলার পলাতক আসামি মোহাম্মদ সাইফুল ওরফে সাবুল চট্টগ্রামে মারা গিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি বিষয়টি জানিয়েছি। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া গ্রহণ করা বলে জানান তিনি।
Discussion about this post