৭১ বাংলাদেশ ডেস্কঃআওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের নেতাকর্মীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের আদেশ অমান্য করে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
শনিবার ট্রেনে করে উত্তরবঙ্গ সফরে যাবার পথে বেলা পৌনে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা রেল স্টেশনে এক পথসভায় ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।
এর আগে সকাল ৮টার দিকে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে নীলফামারীগামী ‘নীলসাগর’ এক্সপ্রেসে করে উত্তরাঞ্চলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সফর শুরু করেন ওবায়দুল কাদের।
মন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা রেল স্টেশনে এসে নামেন এবং সেখানে পথসভায় বক্তব্য রাখেন।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা যে প্রতিশ্রুতি দেন তা রক্ষা করেন। সমবেত জনতার উদ্দেশে তিনি বলন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা কি পূরণ হয়েছে? এ সময় সবাই হাত তুলে সমস্বরে বলেন, হয়েছে।
আগামীতে ক্ষমতায় এলে শতভাগ উন্নয়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় আনুন, দেশে শতভাগ উন্নয়ন হবে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পাবেন।
এ সময় দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলে, দলের আদেশ অমান্য করে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হবে।
তিনি বলেন, কেউ কোন্দল করবেন না, বিশৃঙ্খলা করবেন না। বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে শোকজ পাঠানো হবে।
মন্ত্রী বলেন, এই সরকার ডিজিটাল সরকার। দেশকে ডিজিটাল করতেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রেরণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তার সুফল আমরা পাচ্ছি। এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমেই সাফ চ্যাম্পিয়নশীপ ফুটবল টুর্নামেন্ট টিভিতে পাচ্ছি।
‘বিএনপি-জামাতের রাজনীতির মূল শক্তি গুজব সন্ত্রাস উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা আবারো ২০১৪ সালের মত আগুন সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের পায়তারা করছে। জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের এই অপচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, গত নয় বছরে বিএনপি নয় মিনিটও রাস্তায় আন্দোলনে নামতে পারেনি। বরং তারা কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাঁধে ভর দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করেছিলো। দেশকে অস্থীতিশীল করতে চেয়েছিলো। তারা দুর্নীতিতে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করেছে। আগুন সন্ত্রাস করে তারা বিদেশীদের কাছে দেশের সম্মান ক্ষুন্ন করেছে। আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের সেই ষড়যন্ত্র ভেস্তে দিয়েছি।
বিএনপি গুজবের রাজনীতি করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ গুজবে বিশ্বাস করে না। জনগণ আর বিএনপির দুঃশাসনে ফিরে যেতে চায় না। দেশে যে উন্নয়নের জোয়ার বইছে তা জনগণকে জানাতে হবে। তাতে জনগন আবারো নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনবে।
বক্তব্যের শুরুতেই টাঙ্গাইল বাসীদের দির্ঘদিনের দাবি ঢাকা-টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেন সার্ভিস চালু সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, আমরা ট্রেনে করে এসেছি। ট্রেনে করেই যাচ্ছি। এতে করে বোঝা যায় আপনারও ট্রেনে যেতে পারবেন। আমারা ঢাকা থেকে ট্রেনে এসে ইঙ্গিত দিলাম যে ঢাকা থেকে আপনাদের জন্য ট্রেন আসছে। একটু অপেক্ষা করেন, আপনারা ঢাকা-টাঙ্গাইল ট্রেন পাবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেটা কথা দেন, সেটা পালন করেন। তিনি টাঙ্গাইল বাসীদের ট্রেন দিতে চেয়েছেন। আপনারা ট্রেন পাবেন। তিনি কথা দিয়েছিলেন আপনারা মেডিক্যাল কলেজ পাবেন, পেয়েছেনও।
পথসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম, টাঙ্গাইল সদর আসনের সাংসদ ছানোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতাকর্মী।
পথসভা শেষে ওবায়দুল কাদের সফরসঙ্গীদেরসহ বেলা ১১টার দিকে ফের ট্রেনযোগে উত্তরবঙ্গের উদ্দেশ্যে রওনা হন।