চট্টগ্রামে বাছাইয়ের সময় বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতাসহ ধানের শীষ প্রতীকের অধিকাংশ প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে। বাছাইয়ের সময় স্বতন্ত্র হিসেবে থাকা একজন আওয়ামী লীগ নেতার মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও নৌকা প্রতীকের কোন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্রে ভুল পাননি রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
রোববার চট্টগ্রামের দুই রিটার্নিং কর্মকর্তা বিভাগীয় কমিশনার মো.আব্দুল মান্নান ও জেলা প্রশাসক মো.ইলিয়াস হোসাইনের কার্যালয়ে আলাদাভাবে মনোনয়ন পত্র যাচাইবাছাই করা হয়।
চট্টগ্রাম ৭ (রাঙ্গুনিয়া) ও চট্টগ্রাম ২ (ফটিকছড়ি) আসন থেকে বিএনপির কেন্দ্রিয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম ৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে বিএনপির অপর দুই প্রার্থী আবু আহমেদ হাসনাত ও আবদুল আলীমের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। গিয়াস কাদের চৌধুরীর ছেলে চট্টগ্রাম ৬ (রাউজান) আসনের বিএনপি প্রার্থী সামির কাদের চৌধুরীর মনোনয়ন ঋণ খেলাপির অভিযোগে বাতিল হয়। চট্টগ্রাম ৪ (সীতাকুন্ড-আংশিক কাট্টলী) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। ঋণখেলাপি হওয়ায় যাচাই-বাছাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
উপজেলা বিএনপির নেতারা বলছেন, আসলাম চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করবেন। তাতেও না হলে আদালতে যাবেন তারা। ওই আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানো আবদুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
চট্টগ্রাম-১ (মীরসরাই) আসনে বিএনপির শাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম ও মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক সাংসদ মোস্তাফা কামাল পাশা ও জাসদ (ইনু) আবুল কাশেমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী) আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মোরশেদ খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সুত্রে জানা গেছে। একই আসনে বিএনপির আরেক প্রার্থী এরশাদ উল্যাহর ব্যাংক একাউন্ট সংক্রান্ত জটিলতায় তান মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর মো. নাছির উদ্দিন ও তার ছেলে ব্যারিষ্টার মীর মো. হেলাল উদ্দিনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। মামলা রয়েছে উল্লেখ করে ওই দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান। মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় তাদের দুজনের মামলার ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের আইনজীবী আবুল হাশেম। মীর নাছির মনোনয়নপত্রে তার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা স্থগিত ও একটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছিলেন।
মনোনয়নপত্র বাতিলের পর এক প্রতিক্রিয়ায় মীর নাছির বলেন, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের ইশারায় এটা করা হয়েছে। মামলার ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর আইনজীবী। মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে তিনি নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম ৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী এম শামসুল আলম ঋণ খেলাপি হওয়ায় তার মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করা হয়। চট্টগ্রাম ১২ (পটিয়া) আসনে এলডিপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় এলডিপির শিল্প-বাণিজ্য সম্পাদক এম ইয়াকুব আলী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তালেব বেলালী, চট্টগ্রাম ১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগড়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর জাফর সাদেক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর জব্বার, চট্টগ্রাম ১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে বিএনএফ প্রার্থী নারায়ন রক্ষিত ও গণফোরামের উজ্জল ভৌমিক, চট্টগ্রাম ১৪ (চন্দনাইশ) আসনে তরিকত ফেডারেশনের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী ফারুকী, স্বতন্ত্র মনিরুল ইসলাম, মো. শাহজাহান ও জসিম উদ্দীনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। চট্টগ্রাম ১৬ (বাঁশখালী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা জহিরুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
Discussion about this post