বিশেষ প্রতিনিধিঃউদ্ধারকৃত কর্ণফুলীর জায়গা দখলের আশঙ্কা পরিকল্পনার অভাবের পাশাপাশি পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় কর্ণফুলী নদীর দুই তীরের উদ্ধারকৃত জায়গা আবারো দখল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উদ্ধার করা জায়গায় এখন পর্যন্ত সামান্য কিছু গাছ লাগানো হয়েছে। পুরো জায়গা অনেকটা অরক্ষিত। এ অবস্থায় কর্ণফুলী রক্ষায় নদীর দুই তীরে ওয়াক ওয়ে নির্মাণ এবং বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন নগর বিশেষজ্ঞরা। উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় ৯০ দিনের মধ্যে ২ হাজার ১শ ১২টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ১০ কিলোমিটার জায়গা উদ্ধারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে অনেক স্থাপনা। আর দখল মুক্ত হয়েছে ৫ একর জায়গা। কিন্তু যথাযথভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় এসব জায়গা পুনরায় দখল হয়ে যাওয়ার আশংকা বিশেষজ্ঞদের। ফোরম ফর প্ল্যানের সদস্য প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, উচ্ছেদ কাজ দ্রুতগতিতে করা দরকার এই জন্য যে, উচ্ছেদ সব সময় থেমে যায় বা লোক দেখানোর জন্যে কিছুদিন করা হয়। পূর্ব নির্ধারিত কোনো রকম বাজেট ছাড়াই গত চার দিন ধরে নগরীর সদরঘাট এলাকায় কর্ণফুলী’র তীরে উচ্ছেদের কাজ চলছে। পুনরুদ্ধার করা জায়গায় এখন পর্যন্ত শতাধিক গাছ লাগানো হয়েছে। এ অবস্থায় পুনরায় দখল ঠেকাতে জায়গার মালিক বন্দরের সহযোগিতা চেয়েছেন জেলা প্রশাসক। অপরদিকে নিজস্ব ভূমি নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছেন বন্দর কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা কাঁটাতারের বেড়া এবং গাছ লাগিয়ে দখলে রাখবো। এবং সার্বক্ষণিক নজরদারি আমাদের থাকবে। যাতে ভবিষ্যতে কেউ এখানে অবৈধ স্থাপনা তৈরির সাহস না পায়।’ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘উদ্ধারকৃত জায়গার মধ্যে যে বিষয়টা আমরা প্রাধান্য দেবো যেন নদীর নাব্যতা নষ্ট না হয়। নদী ভরাট যেন না হয়। সে বিষয় মাথায় রেখেই আমরা আমাদের কার্যক্রম গ্রহণ করবো।’ শুধুমাত্র নদীর দুই তীরে ওয়ার্ক ওয়ের পাশাপাশি বিনোদন কেন্দ্র’ নির্মাণের মাধ্যমেই কর্ণফুলী নদীর দখল ঠেকানো সম্ভব বলে মনে করছেন নগর বিশেষজ্ঞরা। সিডিএর সদস্য স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, ‘আমরা আশা করবো এই নদীর পাড় পুনর্দখল বন্ধ করতে বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা। রাস্তা তৈরি করা এবং এই নদীকে ঘিরে যেন পর্যটন ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়’ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, তিন পর্যায়ে এ উচ্ছেদ চলবে। প্রথম পর্যায়ে সদরঘাট থেকে বারিকবিল্ডিং বাংলা বাজার ঘাট, দ্বিতীয় পর্যায়ে বাংলা বাজার ঘাট থেকে পতেঙ্গা এবং সর্বশেষ পর্যায়ে কালুরঘাট ব্রিজ থেকে মোহরা পর্যন্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।