পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ে এখন বিলুপ্তি হতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী গরুর হাল। এক সময় লাল-সবুজের বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের মাঠে চোখে পড়তো কাক ডাকা ভোরে কৃষকদের গরুর সঙ্গে লাঙ্গল ও জোয়াল কাঁধে নিয়ে জমি চাষ করার জন্য মাঠে যাওয়ার দৃশ্য। কিন্তু এখন আর সেই এই দৃশ্য চোখে পড়ে না। কালের আবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে জমিতে গরু দিয়ে হাল-চাষ করা। আধুনিকতার স্পর্শে ও বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিস্কারের ফলে কৃষকদের জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন। আর সেই পরিবর্তনের ছোঁয়াও লেগেছে কৃষিতে। তাই আর মাঠে গান গেয়ে গরু দিয়ে জমি চাষ করতে দেখা যায় না কৃষকদের। কৃষি প্রধান বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে লাঙ্গল-জোয়াল। চিরায়ত বাংলার রুপের সন্ধান করতে গেলে এই দুই কৃষি উপকরণের কথা যেমন অবশ্যই আসবে, তেমনি আসবে হালের গরুর কথাও। আধুনিকতার সঙ্গে সঙ্গে হাল চাষের পরিবর্তনে এখন ট্রাক্টর বা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করার প্রচলন এসেছে। পঞ্চগড় সদর থানার সাতমেড়া ইউনিয়নের লইপাড়া গ্রামের শামসুদ্দিন, সাহিবীজোত গ্রামের শুক্রু অপরদিকে তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের কালদাস পাড়া গ্রামের আব্দুল জব্বার, সমে আলী জানান, ২০ বছর আগে আমরা গরু দিয়ে হালচাষ করতাম। হাল চাষ করেই সংসার চালাতাম। কিন্তু ধীরে ধীরে পাওয়ার ট্রিলারের প্রচলন হওয়ায় গরু দিয়ে হাল চাষের প্রচলন আর নেই বললেই চলে। অল্প সময়ে বেশি জমি চাষ করতে সক্ষম হওয়ায় জমির মালিকরা এখন পাওয়ার ট্রিলার ও ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করে নিচ্ছেন। কিন্ত্র এক সময় এই গরুর হাল ছিল একমাত্র মাধ্যাম। আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়াসের ফলে কৃষি ক্ষেত্রে অনেক সাফল্য এসেছে বলেও তারা বলেন। এতে বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের কালদাস পাড়া গ্রামের সহিরুল ইসলাম বলেন, আগের মত আর কেউ গরু দিয়ে হালচাষ করে না। এখন মাঝে মধ্যে কেউ চাষ করে নিতে আসলে চাষ করে দেই। কি করবো বাপ দাদার পেশা এক বারে ছাড়তেও পারিনা তাই অন্য কাজের ফাঁকে বছরে দুই একবার হাল চাষ করি। এছাড়া গোখাদ্যর মূল্য বৃদ্ধি, গোচারন ভূমির সল্পতার কারনে গরু পালন ছেড়ে দিয়েছে অনেকে। এভাবেই নানা কারণে বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গরুর হাল।ছবি ফাইল ফটো
Discussion about this post