পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধিঃপঞ্চগড় জেলা শহরের পশ্চিম মোলানী পাড়া গ্রামের মোঃ শরিফুল ইসলাম এর শিশু কন্যা মোছাঃ সামিয়া আক্তার নুপুর(৭) কে ধর্ষণের অভিযোগে, ঐ একই এলাকার মোঃ আশরাফুল ইসলাম(৭০) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার উক্ত ঘটনাটি ঘটে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মোঃ আশরাফুল ইসলাম(৭০) শিশু সামিয়া আক্তার নুপুর (৭) কে ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে লোভ দেখিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের দুইদিন পর সামিয়া আক্তার নুপুর এর লজ্জা স্থানে ব্যথা ও জ্বালা যন্ত্রণা করলে নুপুরের হাঁটাচলায় ব্যাঘাত ঘটে। তারপর নুপুর এর বাবা মা শিশু নুপুর কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মোঃ আশরাফুল ইসলাম এর কথা বলে। তারপর এ নিয়ে এলাকায় আলোচনার সৃষ্টি হয় একপর্যায়ে এলাকার লোকজন মোঃ আশরাফুল ইসলাম (৭০) কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে অস্বীকার করে পরে এলাকাবাসী ও নুপুরের আত্মীয়-স্বজনরা পঞ্চগড় থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মোঃ আশরাফুল ইসলাম (৭০) কে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। এদিকে শিশু নুপুর (৭) কে চিকিৎসার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আক্কাস আলী জানান, আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর থানায় মামলা হয়েছে, যার মামলা নং-২২। অন্যদিকে একই তারিখে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৭নং হাড়িভাসা ইউনিয়নের গোয়াল পাড়া গ্রামের মোঃ খাদেমুল ইসলামের স্কুলপড়–য়া অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী মোছাঃ নিশি (১৪) কে ৭নং হাড়িভাসা ইউনিয়নের হাওড়া পাড়া গ্রামের মোঃ শফিকুল ইসলাম এর পুত্র মোঃ ফারুক (১৮) ওই স্কুলছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে একাধিকবার মেলামেশা করেছে বলে ওই স্কুলছাত্রী জানান। উক্ত বিষয়ে নিশির পরিবারের লোকজন জানাজানি হলে গত মঙ্গলবার ভোররাতে স্কুল ছাত্রী বিয়ের দাবি নিয়ে মোঃ ফারুকের বাসায় চলে যায়। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকর ঘটনার সৃষ্টি হয়। দলে দলে এলাকার নারী পুরুষ ঘটনাটি দেখতে আসে। স্কুলছাত্রী এখনো ফারুকের বাসায় অবস্থান করছে এ বিষয়ে এলাকার ইউপি ওয়ার্ড সদস্য মোঃ রাশেদের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, দেখি বিষয়টি কিভাবে সমাধান দেওয়া যায়। এভাবেই ৭নং হাড়িভাসা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বাল্যবিবাহ সম্পন্ন হয়ে আসছে আর ফায়দা লুটছে কিছু দালাল প্রকৃতির মানুষ। গত এক মাস পূর্বে একই ঘটনা ঘটেছে হাড়িভাসার সাহেব বাজার এলাকায় প্রকাশ্যে ছেলে মেয়েকে আলাদা করে দিয়ে পরে গোপনে উৎকোচের মাধ্যমে বিবাহ দেন দালালরা। এই বাল্যবিবাহ কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না হাড়িভাসা ইউনিয়নে। একের পর এক বাল্য বিবাহ ঘটেই চলেছে দেখার কেউ নেই। শুধু তাই নই, গত ১০ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ এলাকায় আরও একটি ঘটনা ঘটেছে, শিশু ধর্ষণের অভিযোগে থানায় অভিযোগ করেছেন, গত মঙ্গলবার কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের পেত্তানির হাট মন্ডল পাড়া গ্রামের মোঃ জয়নুল হক। অভিযোগ তার শিশুকন্যা তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী, একই এলাকার পিতা মৃত আব্দুল গফফার এর বাসার সামনের দোকানে জুস কিনতে গেলে ওই শিশুটিকে একা পেয়ে আব্দুল গফফার শিশুটির শরীরের বিভিন্ন জায়গায় স্পর্শ করে এবং এক পর্যায়ে শিশুটিকে প্যান্ট খুলতে বললে শিশুটি কান্না করতে শুরু করে। এমতাবস্থায় শিশুটি ওখান থেকে পালিয়ে বাসায় আসে এবং তার মাকে ঘটনার বিস্তারিত খুলে বলে, পরে শিশুটির মা বাবা গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান এবং বলেন নারী শিশু বিষয়ে কারো নাক গলানো যাবে না এটা সম্পূর্ণ প্রশাসনিক ব্যাপার। তবে এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, আব্দুল গফফার প্রভাবশালী হওয়ায় সে বারবার এ ধরনের ঘটনা প্রায়সই করে কিন্তু তার কোন বিচার হয় না। তবে এবার আর কোন ছার দেওয়া হবে না, আমরা তার বিচার চাই। যেন অদূর ভবিষ্যতে আর এধরণের ঘটনা ঘটাতে না পারে। এ বিষয়ে এলাকার মানুষের মনে ক্ষোপের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীদের বাড়িতে ডেকে এনে বিষয়টি অবগত করান এবং জানান আব্দুল গফফার এর উচিত বিচার চাই। এ বিষয়ে বোদা থানায় একটি অভিযোগ করেছেন শিশুটির পরিবার । তবে এলাকার সুশীল সমাজের ধারণা সমাজে সুশাসনের ব্যবস্থা না থাকায় একের পরে এক এ ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। সব জায়গাতেই দালাল আর উৎকোচ ছাড়া কোন কথা নেই। তাই অন্যায়কারীরা উৎকোচ দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে। আইন থাকলেও প্রয়োগ হচ্ছে না। কিছু দালাল চক্র মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে এসব নারী শিশু ধর্ষণের বিষয়গুলো বাড়ির আঙ্গীনায় বসে সমাধান দিতে দেখা যায়। তবে সুশীল সমাজের ধারণায় স্লোগান, ‘দালাল হটাও সমাজ বাঁচাও।’ তা না হলে অদূর ভবিষ্যৎ আরও খারাপের দিকে এগিয়ে যাবে।