হাবিবুল ইসলাম হাবিব: সেন্টমার্টিন সৃষ্টির ইতিহাসে সর্বপ্রথম প্রবাল দ্বীপ পরিদর্শন করলেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বলেছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের একটি অংশ হিসেবে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। প্রবালদ্বীপে যে বিজিবির জনবল রয়েছে তা সীমান্তের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে সেন্টমার্টিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। বিজিবি সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি মাদক পাচার রোধ, মানবপাচার রোধসহ অপরাধ দমনে সফলতা আনবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় বিশেষ হেলিকপ্টার যোগে তিনি সেন্টমার্টিন দ্বীপে অবতরণ করেন। এরপর বিজিবির মহাপরিচালক সরাসরি সেন্টমার্টিনের কোনার সংলগ্ন বিজিবির অস্থায়ী বিওপি পরিদর্শন করেন। পরে বিওপিটির স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণের জন্য তিনি নির্বাচিত জায়গা ঘুরে দেখেন। এসময় বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নতুন স্থাপনা নির্মাণ সংক্রান্ত বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করেন। বেলা আড়াইটার দিকে হেলিকপ্টার যোগে তিনি দ্বীপ ত্যাগ করেন। সেন্টমার্টিনে দীর্ঘ ২১ বছর পর নতুন করে সীমান্তরক্ষী বাহিনী মোতায়েন এবং বিওপি প্রতিষ্ঠার পর এটি বিজিবির কোন মহাপরিচালকের প্রথম সফর। এর আগে দ্বীপটিতে বিজিবি সীমান্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকলেও কোস্টগার্ড নিয়োজিত করার পর বিজিবি সদস্যদের প্রত্যাহার করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, চলতি বছর ৭ এপ্রিল থেকে সেন্টমার্টিনে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এর আগে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত সেন্টমার্টিনে তৎকালীন বিডিআর (বাংলাদেশ রাইফেলস) মোতায়েন ছিল। সেন্টমার্টিন থেকে বিভিন্ন সময় রোহিঙ্গা আটক করেছে কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি। বিভিন্ন সময় ওই এলাকায় দস্যুতার ঘটনাও ঘটে। এসব নিয়ন্ত্রণে সেন্টমার্টিনে একটি পুলিশ ফাঁড়িও রয়েছে সেন্টমার্টিনে। তবে বর্তমান সরকার মনে করছে সেন্টমার্টিনের নিরাপত্তায় বিজিবি মোতায়েন দরকার। ২০১৮ সালের অক্টোবরে সেন্টমার্টিনকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করেছিল মিয়ানমার। মিয়ানমার সরকারের জনসংখ্যা বিষয়ক বিভাগের ওয়েবসাইটে তাদের দেশের মানচিত্রে সেন্টমার্টিনকে তাদের ভূখণ্ডের অংশ দেখানো হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে তলব করে এর প্রতিবাদ জানায়। এরপর মিয়ানমার মানচিত্র থেকে সেটি পরিবর্তন করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার রামু সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন চৌধুরী, বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজেদুর রহমান, সেক্টর কমান্ডার মঞ্জুরুল হাসান খান, টেকনাফ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ ফয়সাল হাসান খান অপারেশন অফিসার মেজর প্রভাত কবিরসহ নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা। সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, দ্বীপে বিজিবি মোতায়েনের ফলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার হয়েছে। এতে স্থানীয় অধিবাসী ও পর্যটকেরা নিরাপত্তাহীনতা হতে মুক্ত রয়েছে