বিশেষ প্রতিনিধিঃপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অসুখ-বিসুখ হলে মানুষকে মনে সাহস রাখতে হবে। কারণ শুধু ডাক্তার বা ওষুধ দিয়ে ভালো হবে না। মনের জোর এবং আত্মবিশ্বাস থেকেও অনেকটা সুস্থ হওয়া যায়। আর সেই সাথে সাথে আমাদের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যে সকল নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা সকলকে মেনে চলতে হবে। সংক্রামিত যাতে না হয় সেই দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
রবিবার (১০ মে) সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে অনুদান গ্রহণকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার পক্ষে এসব অনুদান গ্রহণ করেন মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। এ সময় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে তার কার্যালয়ের (পিএমও) সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ মনে হয় অনেক সময় এত ভীত হয়ে যায়, অনেক সময় সে অমানবিক আচরণ করে। কারণ একজন পরিবারের সদস্য যখন অসুস্থ হয়ে পড়ে, তার কী অসুখ হয়েছে তা না জেনেই। তাকে ধুর ধুর করা বা তাকে ধুরে ঠেলে দেয়া এটা কিন্তু ঠিক না। নিজেকে সুরক্ষিত রাখা, গ্লাভস ও মাস্ক পরে পরিবারে সদস্যদের সহযোগিতা করলে খুব একটা ক্ষতি হবে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু সন্তান হয়ে পিতাকে দূর করে দেয়া বা স্ত্রী হয়ে স্বামীকে দূর করে দেয়া কিংবা স্বামী ও সন্তান হয়ে স্ত্রী ও মাকে দূর করে দেয়া কল্যাণকর নয়।’
করোনা সংকট কেটে যাওয়ার আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যেসব নির্দেশনা দিয়েছে, সবাইকে সেটা মেনে চলতে হবে। মেনে চলতে পারলেই সুরক্ষিত থাকা যাবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, নিজেকে সুরক্ষিত রাখা, কোনও বড় জায়গায় একসঙ্গে না হওয়া– এসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। সংক্রমিত না হওয়ার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।’ করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী যে সমস্যা তৈরি হয়েছে তাও ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভয় পেয়ে অনেকের করোনা আক্রান্তদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ নিয়ে খেদ প্রকাশ করেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, ‘পরিবারের কোনও সদস্য অসুস্থ হলে তাকে দূরছাই করা বা দূরে ঠেলে দেওয়া ঠিক না।’
অনুদানদাতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীজুড়ে আজকে এমন একটা অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু হয়েছে যেটা কখনো কেউ ভাবতেই পারে নাই যে এমন একটা যুদ্ধ সবাইকে করতে হবে। মানুষ যুদ্ধ করে শত্রুকে সামনে রেখে। কিন্তু এটা একটা অদৃশ্য শক্তি, একটা ভাইরাস। এর কারণে একদিনে যেমন মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। অনেকই মৃতুবরণ করেছে। এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বব্যাপী এই সমস্যাটা রয়েছে। আমার মনে হয়, এই ধরনের ঘটনা আর কখনো সারা পৃথিবীতে ঘটেনি। যুদ্ধ হয়েছে যেখানে সব এলাকার মানুষ কষ্ট পেয়েছে। কিন্তু এটা এমন একটা অদৃশ্য শক্তির সঙ্গে যুদ্ধ, এখানে যতবড় অস্ত্রধারী বা সম্পদশালী হোক না কেন কারো কিছুই করার নাই সবাই অসহায়।