৩৭০ ধারা তুলে নেয়ার পর প্রথম ঈদ কাটলো কান্নায়। অধিকাংশ মসজিদেই হয়নি ঈদের নামাজ। রোববার ফের কারফিউ জারি করা হয়েছে অঞ্চলটিতে। ফলে ঈদের দিনটিও ছিল আতঙ্কের।
সকালে রাজধানী শ্রীনগরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। কিন্তু বড় বড় মসজিদগুলোতে নামাজের অনুমতি মেলেনি। দেয়া হয়নি কুরবানি।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, কাশ্মীরের ও শ্রীনগরের বেশিরভাগ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায়ের অনুমতি দেয়নি দেশটির সরকার। ফলে ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ‘রাজ্যটিতে’ ঈদের কোনো আমেজ নেই।
গত শনিবার সরকার এবং রাজ্য পুলিশ জানিয়েছিল, জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ। কিন্তু বিবিসির এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গোটা কাশ্মীরের হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছে। গত শুক্রবার জুমার নামাজ পড়ার জন্য কারফিউ কিছু সময়ের জন্য তুলে নেয়া হলে বিক্ষোভ করে তারা।
সোমবার ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কাশ্মীরের ছোট ছোট কিছু মসজিদে। রাজধানী শ্রীনগরসহ বড় বড় মসজিদগুলোতে ঈদের নামাজ পড়ার অনুমতি দেয়নি দেশটির সরকার। সরকারের তরফ থেকে অবশ্য মুসলিমদের ঈদের নমাজ আদায়ের বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজ্যটির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিসহ জ্যেষ্ঠ বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ, যারা গত সপ্তাহ থেকে গ্রেফতার রয়েছেন, তাদেরকে স্থানীয় মসজিদগুলোতে নমাজ আদায়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, গত শনিবার নিরাপত্তা শিথিল করার পরে শ্রীনগরে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি, তার জেরেই রোববার থেকে ফের সেখানে কারফিউ জারি করা হয়। কিন্তু বিবিসি এ সংক্রান্ত ভিডিও প্রকাশ করেছে। যেখানে হাজোর মানুষ স্লোগানে স্লোগানে তাদের বিক্ষোভ জানাচ্ছেন। সবার হাতে যে টাকা নেই এমনটা নয়। যারা ব্যাংকে টাকা গচ্ছিত রেখেছেন তারাও না খেয়েই মরছেন। একজন ব্যাংক কর্মী জানালেন, মানুষ খেপে রয়েছে, অথচ ব্যাংকের ভল্টে কোনো টাকা নেই। এটিএম বুথ গুলোও সব অকেজো, নেটওয়ার্ক নেই, সেখানে পাঠানোর টাকাও আসেনি।
এমন পরিস্থিতিতে ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যটিতে ঈদ শুধু নামে মাত্র উদযাপিত হচ্ছে সেখানে।
বিবিসিসহ আন্তর্জাতিক অনেক গণমাধ্যমে জানানো হয়েছে, ঈদের আগের দিনও (রোববার) বিক্ষোভে ফুঁসেছে কাশ্মীর।
রয়টার্স জানায়, রোববার বিকালে শ্রীনগরের সোউরা এলাকার মসজিদে কয়েকশ বিক্ষোভকারী জড়ো হন। মাথায় স্কার্ফ পরে অসংখ্য নারী ও কিশোরী রাজপথে নেমে আসে।
তারা ভারতবিরোধী স্লোগান দেয়ার পাশাপাশি কাশ্মীর থেকে সেনা প্রত্যাহার ও তাদের স্বায়ত্তশাসন ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।
গত ৫ আগস্ট নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে এবং রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করে। তার আগে থেকেই কাশ্মীরের মানুষকে রীতিমতো বন্দি করা হয়েছে।